প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫৪
দক্ষিণ চীন সাগরে সৃষ্ট শক্তিশালী সুপার টাইফুন রাগাসার আঘাতে তাইওয়ানে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ঝড়ের তাণ্ডবে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলীয় জেলা হুয়ালিয়েনে এখন পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন অন্তত ১৮ জন এবং নিখোঁজ রয়েছেন ১২৪ জন। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে এবং নিখোঁজদের খুঁজে বের করার কাজ চলছে।
প্রশাসনিক কর্মকর্তা লি কুয়ান-তিং জানান, হুয়ালিয়েন জেলাটি এই ঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝড়ের আঘাতে বহু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে, সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ইতোমধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও উদ্ধারকারী বাহিনী দুর্গত এলাকায় কাজ শুরু করেছে।
সুপার টাইফুন রাগাসা মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকালে হুয়ালিয়েন উপকূলে আছড়ে পড়ে। এর আগে ফিলিপাইনের উত্তরাঞ্চলীয় কাগায়ান প্রদেশের বাতানিজ দ্বীপ এলাকায়ও ভয়াবহ তাণ্ডব চালায় এই ঝড়। ঘণ্টায় প্রায় ২৩০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যাওয়া বাতাসে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাগাসার প্রভাবে তাইওয়ান ছাড়াও দক্ষিণ চীন সাগরের উপকূলবর্তী এলাকা ও হংকংয়ে ভারী বর্ষণ ও ঝোড়ো হাওয়া বইছে। তবে এখনো পর্যন্ত হুয়ালিয়েন ছাড়া অন্য কোনো এলাকায় বড় ধরনের হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
দমকল কর্মকর্তা ওয়াং সে-আন জানিয়েছেন, নিহত ও নিখোঁজদের সবাই হুয়ালিয়েন জেলার গুয়াংফু এলাকার বাসিন্দা। ঝড়ের সময় পানির প্রবল স্রোতে নদীর ওপর একটি বড় সড়ক সেতু ধসে পড়ায় এই এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রায় এক হাজার লোকের বসবাস করা গ্রামটি এখন সম্পূর্ণ প্লাবিত এবং অনেকে এখনও আটকে আছেন।
ফিলিপাইন, চীন ও তাইওয়ানের আবহাওয়া অধিদপ্তর রাগাসাকে ‘সুপার টাইফুন’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। ঝড়ের শক্তি এতটাই প্রবল যে এর প্রভাবে হংকংসহ এশিয়ার অন্যান্য অর্থনৈতিক কেন্দ্রগুলোর ওপরও ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও উদ্ধারকারী সংস্থাগুলো ঝড় মোকাবিলায় বিশেষ সতর্কতা নিয়েছে।
ঝড়ের আঘাতে যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং পানীয় জলের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সাধারণ মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। উদ্ধারকারীরা নৌকা ব্যবহার করে দুর্গতদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় খাদ্য, ওষুধ ও জরুরি সামগ্রী সরবরাহ অব্যাহত রাখা হয়েছে।
ঝড়টি বর্তমানে চীনের দক্ষিণ উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং হংকংসহ আশপাশের এলাকায় এর প্রভাব পড়তে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঝড়ের গতিপথে থাকা সব এলাকা সর্তক অবস্থায় রয়েছে। রাগাসার প্রভাবে এশিয়ার একাধিক দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে দুর্যোগ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।