প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৪১
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ায় জুলাই আন্দোলনের সময় ৭ জন হত্যার মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে প্রসিকিউশন। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালেই এই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। প্রতিবেদনে হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে মোট ৮টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
প্রসিকিউশন সূত্র জানিয়েছে, এই অভিযোগগুলো প্রাথমিকভাবে মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে। তদন্ত সংস্থার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের সময় এবং পরে তার কার্যকলাপে মানবাধিকার লঙ্ঘনের উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে।
গত বছরের ২৬ আগস্ট রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে পুলিশ হাসানুল হক ইনুকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন মামলায় কারাগারে আছেন। সাবেক এই মন্ত্রী আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি কুষ্টিয়ায় জোটের প্রার্থী হিসেবে অংশ নেন। কিন্তু নিজ আসনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। এই নির্বাচন পর্ব তার রাজনৈতিক অবস্থানকে প্রভাবিত করেছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই অভিযোগের দাখিলের ফলে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে মানবতাবিরোধী অপরাধ মোকাবিলার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ শুরু হয়েছে। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রক্রিয়া প্রমাণিত অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।
প্রসিকিউশন অফিস সূত্র জানিয়েছে, তদন্ত চলাকালীন সময়ে সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ এবং প্রমাণ যাচাই প্রক্রিয়ায় অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোও এই প্রক্রিয়ায় তদারকি করছে।
এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আশা করা হচ্ছে, ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের বিচারব্যবস্থায় মানবতাবিরোধী অপরাধ মোকাবিলায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে অপরাধীদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে।
সর্বশেষে বলা যায়, কুষ্টিয়ার হত্যাকাণ্ড ও হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দেশের রাজনীতি ও মানবাধিকার প্রসঙ্গে নতুন আলোচনার সূচনা করেছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা এখন মূল চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে।