প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫৮
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তীব্র অভিযোগ করেছেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী, গাজায় কোনো যুদ্ধ নয়, বরং এটি একতরফা গণহত্যা। তিনি বলেন, গত ২৩ মাসে প্রতি ঘণ্টায় একটি শিশুকে হত্যা করা হয়েছে এবং এটি শুধু সংখ্যা নয়, প্রতিটি একটি জীবন।
এরদোয়ান মানবিক বিপর্যয়ের মাত্রা তুলনা করেছেন আধুনিক ইতিহাসের সঙ্গে। তিনি জানান, মাত্র দুই বা তিন বছরের শিশুদের অজ্ঞান করে অঙ্গচ্ছেদ করা হচ্ছে এবং ওষুধ ছাড়া চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে না। এই ঘটনা মানবতার সর্বনিম্ন পর্যায়ের পরিচায়ক। তিনি বিশ্ব নেতাদের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া দেশগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং অন্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস নিউইয়র্কে উপস্থিত না থাকলেও তুরস্ক ফিলিস্তিনি জনগণের পক্ষ থেকে কথা বলছে, যাদের কণ্ঠ রুদ্ধ করা হয়েছে।
এরদোয়ান অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার এবং মানবিক সহায়তা বাধাহীনভাবে পৌঁছে দেওয়ার দাবি করেছেন। তিনি ইসরায়েলের “গণহত্যাকারী চক্র”কে জবাবদিহির আওতায় আনারও আহ্বান জানিয়েছেন। তার মতে, ইসরায়েলের আগ্রাসন শুধুমাত্র গাজা বা পশ্চিম তীরে সীমাবদ্ধ নয়; এটি সিরিয়া, ইরান, ইয়েমেন, লেবানন ও কাতারে ছড়িয়ে পড়ছে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি।
তিনি বিশ্ব নেতাদের কাছে প্রশ্ন তুলেছেন, শিশুদের ক্ষুধা ও ওষুধের অভাবে মৃত্যুর সময় বিশ্বে শান্তি থাকতে পারে কি? তার ভাষায়, এই নৃশংসতা মানবতার ইতিহাসে অনন্য এবং এ ধরনের অত্যাচার মানবাধিকার, শিশুর অধিকার, নারীর অধিকার এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ণ করছে।
এরদোয়ান বিশ্ব সম্প্রদায়কে সতর্ক করে বলেন, ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানো এখন মানবতার খাতিরে এক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। তিনি বলেন, এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দেরি করলে ভবিষ্যতে আরও বেশি মানবিক বিপর্যয় ঘটবে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে ফিলিস্তিনি জনগণ নিরাপদে মানবিক সহায়তা পায় এবং গণহত্যার হুমকি বন্ধ হয়। এরদোয়ানের ভাষ্য গাজায় চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘনের দিক বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরেছে।