প্রকাশ: ২২ জুলাই ২০২৫, ১৫:৪৬
মার্কিন সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম ফক্স নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ও সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত, চীন ও ব্রাজিলের মতো দেশগুলোর ওপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছেন, যদি তারা রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ না করে। এই তিনটি দেশ রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের প্রধান গ্রাহক হওয়ায় তাদের অব্যাহত আমদানি কার্যত ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসনকে সমর্থন করছে বলে মনে করেন গ্রাহাম।
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছেন—যেসব দেশ রাশিয়ার কাছ থেকে সস্তায় তেল কিনে যুদ্ধকে অর্থায়ন করছে, তাদের অর্থনীতি ধ্বংস করে দেওয়া হবে। তিনি দাবি করেন, রাশিয়ার তেলের ৮০ শতাংশই চীন, ভারত ও ব্রাজিল আমদানি করে, যা পুতিনের সামরিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অন্যতম উৎস।
গ্রাহাম আরও বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে অনেক দেশ পুতিনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হলেও এই তিনটি দেশের অবস্থান ভিন্ন। তিনি সতর্ক করেন, পুতিনকে থামানো না গেলে রাশিয়ার আগ্রাসন থামবে না। সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র আরও কড়া পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে এবং ট্রাম্প প্রশাসন হলে তা বাস্তবায়ন হবে দ্রুতগতিতে।
তিনি এর আগে কংগ্রেসে একটি বিল উত্থাপন করেছিলেন, যেখানে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য করা দেশগুলোর ওপর ৫০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দেন। এটি মূলত একটি বার্তা—পুতিনকে সমর্থন করে কেউ ছাড় পাবে না।
সাক্ষাৎকারে গ্রাহাম রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তিনি যদি ট্রাম্পকে ভুল বোঝেন, তবে তা হবে তার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুলগুলোর একটি। যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে আরও শক্তিশালী অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করবে এবং রাশিয়ার অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড আরও দুর্বল করে দেবে।
গ্রাহামের এসব মন্তব্য ট্রাম্প প্রশাসনের আগাম পররাষ্ট্রনীতির ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে। ট্রাম্প যদি পুনরায় ক্ষমতায় ফিরে আসেন, তাহলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক চাপ বাড়বে বলেই ধারণা বিশ্লেষকদের।
বিশ্ব রাজনীতিতে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র দ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়, তবে ভারত, চীন ও ব্রাজিলের মতো উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলো এই লড়াইয়ের মাঝখানে পড়ে জটিল পরিস্থিতিতে পড়তে যাচ্ছে, তা এই হুঁশিয়ারিতে স্পষ্ট।