মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ অবসানে চুক্তি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ওই বৈঠকটি সংবাদমাধ্যমের জন্য উন্মুক্ত ছিল। বৈঠকে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, যদি দেশগুলোর সঙ্গে চুক্তি করা যায়, তবে বাণিজ্য নীতিতে স্থিরতা আসবে। এতে আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বৈঠকে ট্রাম্প আরও বলেন, চীনের সঙ্গে চুক্তি করতে পারলে তার ভালো লাগবে। কারণ এতে উভয় দেশের জন্য লাভজনক কিছু সম্ভব হবে। ট্রাম্প আশা প্রকাশ করেন, আলোচনা ইতিবাচক দিকে এগুচ্ছে এবং খুব শিগগিরই সমাধান আসতে পারে।
এছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প। তিনি জানান, এই যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে অগ্রগতি হচ্ছে এবং দুই পক্ষের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, সংঘাত নিরসনে তার প্রশাসন ইতিমধ্যে অনেকটা এগিয়েছে।
ট্রাম্প তার ট্রেড পলিসি নিয়েও কথা বলেন। তিনি উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব দেশের জাতীয় ঋণ পরিশোধে কাজে লাগানো যেতে পারে। ফলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা আরও মজবুত হবে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।
বৈঠকে ট্রাম্প জানান, চুক্তি না হলে ৯০ দিনের বিরতির পর চীনা পণ্যের ওপর আবারও উচ্চতর শুল্ক আরোপ করা হবে। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, কোনো দেশ বা কোম্পানিকে বিশেষ সুবিধা বা ছাড় দেওয়ার চিন্তা তার সরকারের নেই।
এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন চীনা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছিল। এছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর নতুন শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র, তবে এই সময়সীমা শেষে ফের শুল্ক কার্যকর হওয়ার হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প।
এদিকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং শুক্রবার শুল্ক ইস্যুতে মুখ খুলেছেন। তিনি বলেন, বাণিজ্য যুদ্ধে কেউ জয়ী হয় না। বরং উভয় পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শি জিনপিং বলেন, পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান খুঁজতে হবে।
সবশেষ চীনও পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। দুই দেশের এই পাল্টাপাল্টি অবস্থান বৈশ্বিক অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।