সিরিয়ায় ইসরায়েলের হামলা: তুরস্ক সংঘাতে না জড়ানোর অবস্থানে

গত ডিসেম্বরে সিরিয়ার শাসনের পালাবদলের পর থেকে দেশটির সামরিক স্থাপনায় নিয়মিত হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের এই হামলাগুলো সিরিয়ার নতুন সরকারকে সামরিকভাবে দুর্বল করতে সহায়ক হচ্ছে এবং দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরো জটিল করে তুলছে। যদিও তুরস্ক সিরিয়ার নতুন সরকারের ঘনিষ্ঠ মিত্র, তবে তারা ইসরায়েলের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়াতে চাইছে না। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে, সিরিয়া এবং ইসরায়েলের মধ্যে কোনো ধরনের সংঘর্ষ তাদের দেশের জন্য পছন্দনীয় নয়।

তুরস্ক এবং সিরিয়া দীর্ঘ ৯১১ কিলোমিটার সীমান্ত ভাগাভাগি করেছে, এবং সিরিয়ার পরিস্থিতির ওপর তুরস্কের গভীর মনোযোগ রয়েছে। তুরস্ক একসময় সিরিয়ায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে সমর্থন দিয়েছিল, কিন্তু বর্তমানে সেই গোষ্ঠীই সিরিয়ার শাসন ক্ষমতায় রয়েছে। তুরস্কের মিত্র হিসেবে সিরিয়ার নতুন সরকার কাজ করছে, তবে ইসরায়েলের হামলার কারণে তাদের ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ছে। তুরস্কের মতে, ইসরায়েলের এ ধরনের হামলা সিরিয়ায় অস্থিতিশীলতা বৃদ্ধি করছে এবং ইসলামিক স্টেটসহ বিভিন্ন শত্রুদের শক্তি বাড়িয়ে দিচ্ছে।

ইসরায়েল এই অভিযোগ করেছে যে, তুরস্ক সিরিয়াকে তুর্কি আশ্রিত অঞ্চলে পরিণত করার চেষ্টা করছে, যা আঞ্চলিক রাজনীতিতে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। তবে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিদান বলেন, তারা সিরিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে ইসলামিক স্টেট এবং কুর্দিশ গোষ্ঠী পিকেকের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। তুরস্কের লক্ষ্য সিরিয়ায় অস্থিতিশীলতা প্রতিরোধ করা, কিন্তু ইসরায়েলের হামলার কারণে এই প্রচেষ্টা ব্যাহত হচ্ছে বলে তিনি জানান।

এদিকে, সিরিয়ায় হামলা চালানোর জন্য ইসরায়েলের তীব্র সমালোচনা করেছে তুরস্ক, বিশেষ করে গত বছরের গাজায় হামলার পর। তুরস্ক বলেছে, ইসরায়েলের এই আক্রমণ পুরো অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা বাড়াতে সহায়ক হচ্ছে এবং এটি বৃহত্তর সংঘাতের সৃষ্টি করতে পারে। সিরিয়ার জন্য তুরস্কের সমর্থন অব্যাহত রয়েছে, তবে তাদের ইসরায়েলের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে না জড়ানোর অবস্থান স্পষ্ট।