হল বন্ধ নিয়ে যা বলল রাবির ছাত্র নেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সোমবার ৫ই আগস্ট ২০১৯ ০৯:৩০ অপরাহ্ন
হল বন্ধ নিয়ে যা বলল রাবির ছাত্র নেতারা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) পবিত্র ঈদুল আযহা ও শোক দিবস উপলক্ষে ১৮ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে। এরমধ্যে আবাসিক হলগুলো বন্ধ থাকবে ১৬ দিন। ছুটি কমিয়ে আনার জন্য মানববন্ধন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। স্মারকলিপিও দেওয়া হয় উপাচার্য বরাবর। তবে প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ছাত্র নেতারা। এই সিদ্ধান্তের পুর্নবিবেচনার দাবি জানিয়েছেন তারা। এদিকে, সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রভাষ কুমার কর্মকার প্রেরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানা গেছে, পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাশ ও অফিসসমূহ ৭ আগস্ট বুধবার থেকে ২২ আগস্ট বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মোট ১৬ দিন বন্ধ থাকবে। আবাসিক হলসমূহ ৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার মধ্যে খালি করতে হবে এবং ২৪ আগস্ট রবিবার সকাল ১০টায় তা খুলে দেয়া হবে।

ছাত্র ইউনিয়ন রাবি সংসদের সভাপতি শাকিলা খাতুন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে সার্বক্ষণিক জ্ঞান চর্চার জায়গা একটা জায়গা। ৩৬৫ দিন ২৪ ঘন্টাই খোলা থাকবে এটা আমাদের ধারণা। সে দিক থেকে শিক্ষার্থীদের কথা ভেবে প্রশাসনের হল বন্ধ রাখা উচিত না। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যেমন ঢাবি, জাবিতে এমন হয় না। শিক্ষার্থীদের সুবিধা অসুবিধা বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিৎ। বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক রনজু হাসান অভিযোগ করে বলেন, হল ছুটির কারণে শিক্ষার্থী নানা অসুবিধায় পড়তে হয়। একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে কারণে এতদিন হল বন্ধ রাখাটা গ্রহণযোগ্য না। একাডেমিক, পার্টটাইম চাকুরিসহ বিভিন্ন কাজে জড়িত শিক্ষার্থীরা তাদের কাজ পরিচালনা করতে পারবে না। এবিষয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কথা প্রশাসন আমলে নিচ্ছে না।

ছাত্রদল রাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান বলেন, এই ছুটির পর পরই অনেক শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা রয়েছে। তাই প্রস্তুতি নেয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে থাকা প্রয়োজন। হল বন্ধ রাখার কারণে তা সম্ভব হবে না। আমরা শিক্ষার্থীদের অসুবিধার ব্যাপারে কথা বলে প্রশাসনকে বিষয়টি অবিহত করবো। রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, শিক্ষার্থীদের অসুবিধার জন্য আমরা হল বন্ধের পক্ষে না। যেহেতু প্রাধ্যক্ষ পরিষদ সুপারিশ করেছেন তাই আমরা হল বন্ধের সময়কাল কমানোর জন্য শ্রীঘ্রই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবো। হল বন্ধের সময় কয়েকদিন কমানো হলে শিক্ষার্থীরা তাদের ছুটি পরবর্তী ক্লাস-পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে।

রাকসু আন্দোলন মে র সমন্বয়ক আবদুল মজিদ অন্তর জানান, অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েই এতদিন হল বন্ধ রাখার নজির নেই। শিক্ষার্থীদের মতামতকে পাত্তা না দিয়ে রাবিতে এত দিন হল বন্ধ রাখা হচ্ছে। এর আগে ঈদুল ফিতর ও গ্রীষ্মকালীন অবকাশ উপলক্ষে টানা ২৫ দিন আবাসিক হলগুলো বন্ধ রাখা হয়। বিভিন্ন সামাজিক গণমাধ্যমে তা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। হল বন্ধের প্রতিবাদে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে ছাত্র সমাবেশ করেছে শিক্ষাবাণিজ্য বিরোধী শিক্ষার্থীরা। এসময় ভর্তি পরীক্ষার ফরম মূল্য প্রসঙ্গসহ ৫ দফা দাবিতে প্রক্টরের মাধ্যমে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন। বিশেষ কিংবা জরুরি কোন পরিস্থিতি ছাড়া হল বন্ধ না করার এবং পবিত্র ঈদুল আযহার ছুটি কমিয়ে সাতদিন করার দাবি জানান তারা।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব