খাগড়াছড়িতে সেনাবাহিনীর অভিযানে গাঁজা খেত ধ্বংস

নিজস্ব প্রতিবেদক
আরিফুল ইসলাম মহিন -খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২১শে জানুয়ারী ২০২৫ ০৪:২০ অপরাহ্ন
খাগড়াছড়িতে সেনাবাহিনীর অভিযানে গাঁজা খেত ধ্বংস

খাগড়াছড়ির গুইমারায় অভিযান চালিয়ে দুই একর গাঁজা খেত ধ্বংস করেছে সেনাবাহিনী। সিন্দুকছড়ি জোনের আওতাধীন গড়াইছড়ি সেনা ক্যাম্পের সেনাসদস্যরা মঙ্গলবার মধ্যরাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে গহীন অরণ্যের গাঁজা খেত ধ্বংস করা হয়, যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় অর্ধ কোটি টাকা।  


সেনাবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ি এলাকার আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠনগুলো গোপনে এসব গাঁজা চাষ করে আসছিল। সিন্দুকছড়ি জোন অধিনায়ক লে. কর্নেল ইসমাইল শামস আজিজির নির্দেশে এই অভিযানটি পরিচালনা করা হয়। অভিযানের নেতৃত্ব দেন জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর ইশতিয়াক তাসনিম। অভিযানকালে সেনাসদস্যরা পুরো এলাকাটি তল্লাশি করে এবং গাঁজার খেত পুড়িয়ে ধ্বংস করেন।  


সেনা কর্মকর্তারা জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের এই অভিযান এলাকায় মাদক চাষ ও বিপণন বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। স্থানীয় সূত্র মতে, দীর্ঘদিন ধরে আঞ্চলিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো এ ধরনের গাঁজা চাষ পরিচালনা করে আসছিল, যা স্থানীয় প্রশাসনের নজরের বাইরে ছিল। অভিযানের মাধ্যমে এই অপরাধচক্রের বড় একটি অংশ ধ্বংস করা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।  


স্থানীয় বাসিন্দারা সেনাবাহিনীর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তাদের মতে, মাদক চাষ এবং তার বিস্তার এলাকায় তরুণ প্রজন্মকে বিপথে পরিচালিত করছে। সেনাবাহিনীর এই কার্যক্রমের ফলে মাদকবিরোধী কার্যক্রম আরও শক্তিশালী হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।  


সেনা জোন কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, এই অভিযানের পর মাদক চাষ এবং এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গাঁজা চাষ নির্মূলের পাশাপাশি অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে তারা প্রশাসনের সহযোগিতায় কাজ করবেন।  


অভিযানকালে গাঁজা চাষের সাথে সরাসরি জড়িত কেউ আটক হয়নি। তবে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার জন্য অনুসন্ধান চলছে বলে জানিয়েছেন সেনা কর্মকর্তারা। এছাড়া অভিযানের সময় উদ্ধারকৃত গাঁজা গাছ এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।  


এদিকে, সেনাবাহিনীর এই অভিযান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। তারা মনে করেন, এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে মাদক চাষ ও ব্যবসা পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব হবে।  


সেনা জোন অধিনায়ক লে. কর্নেল ইসমাইল শামস আজিজি বলেন, মাদকবিরোধী অভিযান শুধু সেনাবাহিনীর নয়, সকলের সম্মিলিত দায়িত্ব। এই চেষ্টায় আমরা এলাকাবাসীর সহযোগিতা কামনা করি। মাদকমুক্ত একটি সমাজ গড়তে সেনাবাহিনীর এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।