প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ২২:১২
গোপালগঞ্জে চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং কারফিউ জারির প্রেক্ষাপটে আগামীকাল বৃহস্পতিবারের (১৭ জুলাই) এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি বুধবার রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, শুধুমাত্র গোপালগঞ্জ জেলার শিক্ষার্থীদের জন্যই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে। অন্য জেলার পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে।
সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ভূগোল (তত্ত্বীয়) দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা। বিকেলে কিছু বিষয়ে অন্যান্য পরীক্ষা থাকলেও গোপালগঞ্জে সে সময় কোনো পরীক্ষা নির্ধারিত ছিল না। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গোপালগঞ্জে স্থগিত হওয়া পরীক্ষার নতুন তারিখ পরবর্তীতে জানিয়ে দেওয়া হবে এবং শিক্ষার্থীদের বোর্ডের ওয়েবসাইট বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে তা জানতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এনসিপির গোপালগঞ্জে অনুষ্ঠিত সমাবেশকে কেন্দ্র করে শহরে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এই সহিংসতার জেরে বুধবার রাত ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করে প্রশাসন। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে এবং জনসাধারণকে ঘর থেকে বের না হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গোপালগঞ্জে সংঘটিত সহিংস ঘটনায় এ পর্যন্ত চারজন নিহত এবং পুলিশ, সাংবাদিকসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এনসিপির সমাবেশের পর ফেরার পথে এই হামলার ঘটনায় এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নিরাপত্তা বাহিনীকে তৎপর হতে দেখা যায়।
কারফিউর কারণে পরীক্ষার স্থগিত হওয়া নিয়ে শিক্ষার্থীরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। কেউ কেউ নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও, কেউবা প্রস্তুতির মধ্যেই হঠাৎ স্থগিত হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
এদিকে শিক্ষা বোর্ড জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই নতুন সময়সূচি ঘোষণা করা হবে এবং শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে বলেছে।
শিক্ষা বোর্ডের এই সিদ্ধান্ত দেশের সামগ্রিক পরীক্ষার পরিবেশে তেমন প্রভাব ফেলবে না বলেও জানা গেছে। তবে গোপালগঞ্জের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ কাটেনি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের মানসিক প্রস্তুতিও ব্যাহত হয়। তাই দ্রুত স্থিতিশীল পরিস্থিতি ও স্বচ্ছ যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি।