প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৫, ১৭:৫৯
বাংলাদেশ বহুপাক্ষিক উন্নয়ন সংস্থাগুলোর কাছ থেকে আরও ৩৫০ কোটি ডলার ঋণ পেতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য দেন। বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) যৌথভাবে এই অর্থ জুন মাসের মধ্যেই দেবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ডলারের বিনিময় হার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আইএমএফের সঙ্গে আলোচনা চলছিল বাংলাদেশের। আইএমএফের অন্যতম প্রধান শর্ত ছিল বাজারভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় হার কার্যকর করা। এই শর্ত পূরণে গতি না থাকায় আইএমএফ গত কয়েক মাস ঋণের কিস্তি আটকে রেখেছিল। তবে সম্প্রতি বাংলাদেশ এই শর্ত পূরণে সম্মতি জানানোয় আইএমএফ একসঙ্গে দুটি কিস্তি ছাড় করতে রাজি হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ঘোষণা দেন যে আজ থেকেই বাজারভিত্তিক ডলারের বিনিময় হার চালু করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এখন বাজারে রেমিট্যান্স প্রবাহ ভালো, রিজার্ভে স্থিতিশীলতা এসেছে এবং লেনদেন ভারসাম্যও উন্নত হয়েছে।’ ফলে তার মতে, এটি বাজারভিত্তিক বিনিময় হার বাস্তবায়নের উপযুক্ত সময়।
এছাড়া তিনি জানান, জুন মাসের মধ্যে ৩৫০ কোটি ডলার পেলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও শক্তিশালী হবে। এতে অর্থনীতিতে আস্থা বাড়বে এবং বিনিময় হার নিয়ে অনিশ্চয়তা হ্রাস পাবে। তিনি আরও বলেন, বাজারের চাহিদা ও সরবরাহের ওপর ভিত্তি করে এখন থেকে ডলারের দর নির্ধারিত হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক জোরদারে সহায়ক হবে। একইসঙ্গে বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের আস্থাও বাড়বে বলে তারা মনে করছেন। তবে তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা এবং পর্যাপ্ত তদারকি নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে, এডিবি ও বিশ্বব্যাংক থেকেও ঋণের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানা গেছে। এই অর্থ প্রধানত বাজেট সহায়তা, রিজার্ভ শক্তিশালীকরণ এবং মুদ্রা নীতিতে স্থিতিশীলতা আনতে ব্যবহৃত হবে।
সরকারের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, ডলারের বাজার স্বাভাবিক রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং এর ইতিবাচক প্রভাব অর্থনীতিতে শিগগিরই দেখা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।