আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ধানমন্ডি ৩২ ভাঙচুরের প্রতিধ্বনি

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ৬ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:৫৭ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ধানমন্ডি ৩২ ভাঙচুরের প্রতিধ্বনি

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে গুরুত্ব পেয়েছে রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত ৩২ নম্বর বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা। বিবিসি, রয়টার্স, সিএনএন, দ্য গার্ডিয়ান, এবিসি নিউজ, আরব নিউজ, আনাদোলু এজেন্সি, টিআরটি ওয়ার্ল্ডসহ বিভিন্ন শীর্ষ গণমাধ্যম বিষয়টি ফলাও করে প্রচার করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের আশ্রয়ে থাকা শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভাষণের পরই বিক্ষোভকারীরা ৩২ নম্বর বাড়ি ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীর বাড়িতে হামলা চালায়।  


বুধবার রাত আটটার দিকে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ছাত্র-জনতা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনে জড়ো হয়। সন্ধ্যার পর থেকেই সেখানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ জনতা ভবনটিতে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালায় এবং পরে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরবর্তী সময়ে বুলডোজার মেশিন এনে বাড়ির বিভিন্ন অংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। শুধু এই ভবনই নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের স্মৃতিবিজড়িত স্থাপনায়ও হামলার ঘটনা ঘটে।  


সিএনএন তাদের প্রতিবেদনে শিরোনাম দিয়েছে, ‘বাংলাদেশের বিক্ষোভকারীরা নির্বাসিত সাবেক নেত্রী শেখ হাসিনার বাড়ি ধ্বংস করেছে।’ তারা জানিয়েছে, ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহে ১৫ বছরের শাসনের পর পালিয়ে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ভারতে আশ্রয় নিয়ে তিনি তার সমর্থকদের প্রতি ভিডিও বার্তায় আহ্বান জানান, যা আন্দোলনকারীদের আরও ক্ষুব্ধ করে তোলে।  


ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান লিখেছে, ‘বাংলাদেশি বিক্ষোভকারীরা স্বাধীনতার প্রতীক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর পারিবারিক বাড়ি ধ্বংস করেছে।’ তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পাকিস্তান ভাঙনের ঘোষণা এসেছিল এই বাড়ি থেকেই। তবে পরবর্তী সময়ে এটি কর্তৃত্ববাদের প্রতীকে পরিণত হয় বলে অভিযোগ করেছে বিক্ষোভকারীরা।  


রয়টার্স তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাবার বাড়ি উচ্ছেদ করেছে বিক্ষোভকারীরা।’ সংস্থাটি জানায়, শেখ হাসিনার জ্বালাময়ী বক্তৃতার পরই এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতাদের বাড়িতেও হামলা হয়।  


বিবিসি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ‘বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের অনেক সদস্যের বাড়িতেও হামলা চালানো হয়েছে, যা দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।  


তুরস্কের টিআরটি ওয়ার্ল্ড শিরোনাম করেছে, ‘ভারত থেকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ বাংলাদেশে প্রতিবাদের ঝড় তুলেছে।’ আনাদোলু এজেন্সিও একই ধরনের সংবাদ প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে, বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে আন্দোলনকারীরা।  


এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশি বিক্ষোভকারীরা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাড়িতে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে।’ মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজও জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা নির্বাসিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যুক্ত একটি বাড়ি ধ্বংস করেছে এবং এটি ছিল তাদের ক্ষোভের প্রকাশ।  


সৌদি আরবের আরব নিউজও জানিয়েছে, বাংলাদেশের হাজার হাজার বিক্ষোভকারী কর্তৃত্ববাদের প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। ভারত ও পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে প্রচারিত হয়েছে।