প্রকাশ: ২২ জুলাই ২০২৫, ১১:৩
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান ‘এফ-সেভেন বিজিআই’ বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন পাইলট তৌকির ইসলাম সাগরসহ অন্তত ২০ জন। চূড়ান্ত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে সোমবার দুপুরে একক উড্ডয়নে আকাশে উড়েছিলেন তিনি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই ফ্লাইটই হয়ে ওঠে তার জীবনের শেষ। দুর্ঘটনার পর রাজশাহীর উপশহরের ৩ নম্বর সেক্টরের ‘আশ্রয়’ ভবনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে, যেখানে পাইলট তৌকিরের পরিবার বসবাস করতেন।
তৌকিরের গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাট এলাকায় হলেও তার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহীর সপুরা এলাকায় ভাড়া থাকতেন। পিতার নাম তহুরুল ইসলাম এবং মাতার নাম সালেহা খাতুন। তৌকির ছিলেন পরিবারের একমাত্র পাইলট। তাঁর স্ত্রী আকশা আহম্মেদ নিঝুম একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষিকা এবং ঢাকায় বিমানবাহিনীর কোয়াটারে তারা একসঙ্গে বসবাস করতেন। মাত্র এক বছর আগে তাদের বিয়ে হলেও আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে মাত্র দুই মাস আগে।
দুর্ঘটনার খবর শুনে রাজশাহীর বাসার মালিক আতিকুল ইসলাম জানান, পাইলট তৌকিরের প্রথম একক উড্ডয়নের খবর শুনে সবাই আনন্দে ভেসেছিলেন। অথচ কিছুক্ষণ পরেই ভয়াবহ এক শোকবার্তা এসে ভেঙে দেয় সে স্বপ্ন। পাইলটের মেজ চাচা মতিউর রহমান জানান, তৌকিরের কোনও সন্তান হয়নি এবং তার মৃত্যুর খবরে গোটা পরিবার নিঃশেষ হয়ে গেছে।
তৌকিরের মামা শওকত আলী জানান, ছোটবেলা থেকেই তার স্বপ্ন ছিল পাইলট হওয়ার। পরিবারের চাওয়া ছিল সে সেনাবাহিনীতে অফিসার হোক, কিন্তু নিজের স্বপ্নেই ছিল সে অনড়। মেধাবী ছাত্র তৌকির পড়ালেখা করেছেন রাজশাহী গভ. ল্যাবরেটরি স্কুল ও পাবনা ক্যাডেট কলেজে। পরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে যোগ দেন।
সেলিম নামের আরও এক মামা জানান, তৌকিরের দাফন মঙ্গলবার রাজশাহীতে সম্পন্ন হবে। এদিকে দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে অনেকেই শিক্ষার্থী এবং তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি দগ্ধদের চিকিৎসা চলছে। উত্তরার আকাশে কালো ধোঁয়া আর রাজশাহীর বাতাসে আজ শুধু কান্নার শব্দ।