প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৫, ১৮:২৬
আগামী আগস্ট মাস থেকে দেশের ৫৫ লাখ দরিদ্র ও নিম্নআয়ের পরিবারকে প্রতি কেজি মাত্র ১৫ টাকা দরে চাল দেওয়ার কার্যক্রম পুনরায় শুরু হচ্ছে। মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার জানান, সরকার ছয় মাসব্যাপী এই খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি পরিচালনা করবে। এতে প্রতিটি পরিবার প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাবে, যা মোট ৯০ হাজার টন চালের মাসিক সরবরাহ নিশ্চিত করবে। আগস্ট, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে চাল বিতরণ করা হবে এবং ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত থাকবে। পরে ফেব্রুয়ারি ও মার্চে পুনরায় এই বিতরণ চালু হবে। সরকারের এই উদ্যোগ খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে এবং চলমান দুর্যোগ ও মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষাপটে নিম্নআয়ের মানুষদের পাশে দাঁড়াতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
অপরদিকে, দেশে সম্ভাব্য বন্যা এবং বৈরী আবহাওয়ার কারণে খাদ্য সংকট মোকাবিলায় সরকার আগাম প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। এই লক্ষ্যে সরকারি পর্যায়ে ৪ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং বেসরকারি পর্যায়ে আরও ৫ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। খাদ্য উপদেষ্টা জানান, এই পদক্ষেপের ফলে দেশের অভ্যন্তরীণ চালের বাজার স্থিতিশীল থাকবে এবং সাধারণ মানুষের খাদ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় অন্তর্ভুক্ত হতে গেলে জাতীয় পরিচয়পত্রধারী দরিদ্র ব্যক্তি বা পরিবারের নাম স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভার তালিকাভুক্ত হতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে তদারকি জোরদার করা হবে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, খাদ্য মূল্য বৃদ্ধি, শ্রমজীবী মানুষের আয় হ্রাস এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব বিবেচনায় এ ধরনের কর্মসূচি দেশে সামাজিক সুরক্ষার জালকে আরও মজবুত করবে। খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি সরকার যদি কৃষক পর্যায়েও সমর্থন অব্যাহত রাখে, তবে দেশীয় উৎপাদন ব্যাহত না হয়ে বরং আরও উৎসাহিত হবে।
দেশের সর্বস্তরের মানুষ বিশেষ করে গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠী এই কর্মসূচির মাধ্যমে সরাসরি উপকৃত হবেন। খাদ্য মজুত ও বিতরণে স্বচ্ছতা রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট মহল।