প্রকাশ: ২২ জুলাই ২০২৫, ১৬:৩২
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নতুন জাতীয় সনদের আওতায় দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রধান থাকতে পারবেন না। এ সিদ্ধান্তকে ঘিরে মঙ্গলবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত ১৭তম দিনের সংলাপে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বিষয়টি রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে তুলে ধরেন।
আলী রীয়াজ বলেন, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল প্রধানমন্ত্রী পদে দলীয় প্রধানের না থাকার পক্ষে মত দিয়েছে। তবে বিএনপি, এলডিপি, লেবার পার্টি, এনডিএম, ১২ দলীয় জোট এবং আম জনতার দলসহ কয়েকটি দল এ বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেছে। তারা একই ব্যক্তিকে দলীয় প্রধান, সংসদ নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায়।
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি এবং আরও কিছু দল দলীয় প্রধানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বিরোধিতা করেছে। ফলে কমিশন সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, প্রধানমন্ত্রী পদে দলীয় প্রধান থাকা যাবে না। তবে যারা এই সিদ্ধান্তের সাথে একমত নয়, তারা জাতীয় সনদে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ যুক্ত করতে পারবে।
আলোচনার শুরুতেই আলী রীয়াজ রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে বলেন, আপনারা যদি চান, তাহলে সিদ্ধান্তটি নিয়ে পুনর্বিবেচনা করা যেতে পারে। তবে কমিশনের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী, অতীতের মতো এবারও ভিন্নমত রাখা যাবে নোট অব ডিসেন্ট আকারে। এটি কমিশনের সিদ্ধান্ত হিসেবে আপনাদের জানিয়ে দিচ্ছি।
এদিন আলোচনায় আরও আলোচনা হয় প্রধানমন্ত্রীর একাধিক দায়িত্বে থাকা, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাঠামো এবং বিভিন্ন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে। এসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলের প্রস্তাবের ভিত্তিতে একটি সমন্বিত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে কমিশন।
আলোচনায় আলোকপাত করা হয় নির্বাচন কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশন, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং ন্যায়পাল নিয়োগের নিয়মাবলির ওপরও।
কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার আলোচনার শুরুতে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে নিহতদের স্মরণে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন। ঘটনাটি উপস্থিত সবাইকে আবেগপ্রবণ করে তোলে।
এই সংলাপকে ঘিরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্দেশ্য, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করা। আর তারই আলোকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে সব বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চায় কমিশন।