ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাধুহাটী ও মধুহাটী ইউনিয়নের ত্রিশটিরও বেশি গ্রামের মাঠের পর মাঠ এখন পানিতে থই থই করছে। কৃষকদের রোপণকৃত ধানের ক্ষেত হাজার হাজার হেক্টর জমিতে পানির নিচে তলিয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে খালগুলো খনন না করায় এবং টানা বৃষ্টিতে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এমন চরম জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিএডসির খননকৃত খালগুলো বছরের পর বছর ধরে ভরাট হয়ে গেছে। কাজলের খাল, পয়াদপুর খাল ও মামুনশিয়া খাল—এই তিনটি প্রধান খাল পানির প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করছে। যার ফলে সাধুহাটি ইউনিয়নের বংকিরা, নাথকুন্ডু, বেজিমারা, ভুলটিয়া, ছাইভাঙ্গা, শ্যামনগর, মামুনশিয়া, যাদবপুর, গোপালপুর, রাঙ্গিয়ারপোতা, গোবিন্দপুরসহ অন্তত ৩০টি গ্রামের কৃষক গভীর বিপাকে পড়েছেন।
বংকিরা গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম জানান, “বছরের পর বছর ধরে এই সমস্যার কথা আমরা বলে আসছি। বিএডিসি দপ্তরে অভিযোগও দিয়েছি। কর্মকর্তারা আশ্বাস দেন কিন্তু কাজ কিছুই হয় না।” তিনি আরও বলেন, “এ বছর ধান চাষের শুরুতেই জমি পানিতে ডুবে গেছে, এতে আমাদের মাথায় হাত।”
রাঙ্গিয়ারপোতা গ্রামের কৃষক আব্দুল হাকিম বলেন, “এই অঞ্চলের ১০ গ্রামের পানি কাজলের খাল দিয়ে চিত্রা নদীতে চলে যেত। এখন উৎস্যমুখ বন্ধ হয়ে গেছে, সব পানি জমে গেছে মাঠে।”
স্থানীয় ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম মনসাদ জানান, “আমরা লিখিতভাবে বিএডিসিকে জানিয়েছি। খাল খননের দাবিতে এলাকাবাসীও সোচ্চার। কিন্তু এখনো দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ নেই।”
বিএডিসির (সেচ) সহকারী প্রকৌশলী সৌরভ কুমার বিশ্বাস বলেন, “আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। মাঠের পর মাঠ পানিতে তলিয়ে আছে। আমি ইতোমধ্যে নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠিয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ সমস্যার সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
কৃষকদের দাবি, স্থায়ী সমাধানের জন্য অবিলম্বে খালগুলো খনন ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে, নাহলে প্রতি বছরই এমন দুর্ভোগের মুখে পড়তে হবে।