প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৫, ১৯:৮
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী বিতর্কিত এলাকায় গত দুই দিন ধরে গোলাগুলির ঘটনা থামছে না। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ জনে, যাদের মধ্যে ১৫ জন থাইল্যান্ডের নাগরিক এবং একজন কম্বোডিয়ার। এই সংঘর্ষে আহত হয়েছে আরও ৪৬ জন, যার অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। প্রাণহানির ঘটনা ও সংঘর্ষের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় দুই দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে প্রায় এক লাখ ২০ হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এই মুহূর্তে নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নেওয়া লোকজন নিকটস্থ ৩০০টিরও বেশি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে। অপরদিকে কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী ওডার মিনচি প্রদেশ থেকে প্রায় দেড় হাজার পরিবার নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত হয়েছে। তবে কম্বোডিয়ায় হতাহতের সঠিক সংখ্যা এখনও জানা যায়নি, তবে খবর রয়েছে কম্বোডিয়ায় অন্তত একজন নিহত এবং পাঁচজন আহত হয়েছে।
ঘটনাটি গত এক দশকে দুই দেশের মধ্যে সংঘটিত সবচেয়ে বড় সীমান্ত বিরোধ বলে বিবেচিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে বিতর্কিত তা মোন থম মন্দিরের আশপাশে সংঘর্ষ শুরু হয়। এই সংঘর্ষে প্রথম দিনে দুইজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। সংঘর্ষ তীব্রতা পাওয়ার পর দুই দেশ তাদের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক ‘সর্বনিম্ন পর্যায়ে’ নামিয়ে আনার ঘোষণা দেয়। থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়া উভয়ই একে অপরের কূটনীতিকদের দেশে ফিরিয়ে পাঠিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ শুক্রবার জরুরি বৈঠকে বসছে, যাতে সংঘর্ষের মাত্রা এবং পরিধি বাড়ানো রোধ করা যায়। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনা কমানো এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজে বের করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।
স্থানীয় বাসিন্দারা আশঙ্কায় সীমান্ত এলাকা ত্যাগ করেছেন। এই সংঘর্ষের কারণে নিরাপত্তা পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতি হচ্ছে এবং দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দ্রুত শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় পদক্ষেপ জরুরি।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং প্রাণহানির সংখ্যা কমাতে স্থানীয় প্রশাসন ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো কাজ করছে। তবে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার কোনও খবর এখনও পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি বর্তমানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং দুই দেশের ভবিষ্যত সম্পর্কের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।