প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১৯:২৯
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার আলমনগর গ্রামের কলেজছাত্র হৃদয় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হলেও জুলাই শহীদ দিবস ২০২৫ উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হননি তার পরিবার। গত ৫ আগস্ট গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে প্রকাশ্যে দিবালোকে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন হৃদয়। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ হৃদয়কে ধরে এনে গুলি করে এবং পরে লাশ টেনে হিচড়ে নিয়ে যায়। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে এখনো শোকে ভেঙে পড়া পরিবার এই উপেক্ষাকে অত্যন্ত অপমানজনক ও হৃদয়বিদারক বলে মন্তব্য করেছে।
জুলাই শহীদ দিবসে গোপালপুর উপজেলা পরিষদে দোয়া ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হলেও শহীদ হৃদয়ের পরিবারের কাউকে ডাকেনি আয়োজকরা। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠান হলেও শহীদ পরিবারকে বাদ দিয়ে যেন প্রশাসন হৃদয়কে শহীদ হিসেবে স্বীকৃতি দিতেও পিছিয়ে গেছে। হৃদয়ের মা রেহানা বেগম বলেন, আজো ছেলের লাশ চোখে দেখিনি, শুধু ভাইরাল ভিডিও দেখে কাঁদি। পরিবারটি বর্তমানে পঙ্গু বাবার আয়হীন অবস্থা, ঋণগ্রস্ততা ও সামাজিক বঞ্চনার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, হৃদয় গাজীপুরে অটোরিকশা চালিয়ে পরিবার চালাতেন। ঘটনার দিন ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে পুলিশের হাতে জীবন হারান। ঘটনাটি তদন্ত করে গাজীপুর ডিবির এসআই ইব্রাহীম হোসেন নিশ্চিত করেছেন, ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং মামলার অভিযোগপত্র চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, আয়োজনে হৃদয়ের পরিবারকে বাদ দেওয়া ইচ্ছাকৃত নয় এবং শহীদ তালিকায় তার নাম না থাকায় এমনটি হতে পারে। প্রশাসনিকভাবে তালিকাভুক্ত করতে চেষ্টা চলছে। গোপালপুর জামায়াত ও বিএনপির নেতারা শহীদ হৃদয়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, উপজেলা প্রশাসনের আচরণ প্রমাণ করে স্বৈরাচারের প্রেতাত্মা এখনো সক্রিয়।
হৃদয় হত্যার ভিডিও আন্তর্জাতিক সংস্থা ফরেনসিকভাবে বিশ্লেষণ করে প্রামাণ্য চিত্র প্রকাশ করেছে যা বিশ্বব্যাপী ভাইরাল হয়। এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডে শহীদ পরিবারকে উপেক্ষা করায় সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী দাবি তুলেছেন, হৃদয়কে অবিলম্বে শহীদ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে তার পরিবারকে যথাযোগ্য মর্যাদা ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হবে।