প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১৯:৩৬
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচিকে ঘিরে চরম উত্তেজনার মধ্যে সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন তিনজন। আহত হয়েছেন অন্তত ১২ জন। বুধবার দুপুরে জেলা শহরের কলেজগেট ও লঞ্চঘাট এলাকায় পুলিশ, সেনাবাহিনী ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে এনসিপি সমর্থকদের ত্রিমুখী সংঘর্ষে এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চারজনকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতদের মধ্যে পরিচয় পাওয়া গেছে গোপালগঞ্জ শহরের দীপ্ত সাহা (২৫) এবং কোটালীপাড়ার রমজান কাজী (১৮)-এর। সংঘর্ষে আহত একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জীবিতেশ বিশ্বাস।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্র জানায়, এনসিপির কেন্দ্র ঘোষিত মাসব্যাপী ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ গোপালগঞ্জ শহরে সমাবেশ শেষে কেন্দ্রীয় নেতাদের বহর ফেরার সময় শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় সড়ক অবরোধ করে হামলা চালায় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এই সময় নেতাকর্মীদের ওপর শুরু হয় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, ভাঙচুর ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া।
ঘটনার পর নাহিদ ইসলাম, আখতার হোসেন, হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমসহ এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা সেনাবাহিনীর এপিসিতে করে নিরাপদে স্থান ত্যাগ করেন। তবে তাদের বহরের একাধিক গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে বলে জানান দলীয় সূত্র। এনসিপির অভিযোগ, গোপালগঞ্জে কর্মসূচি সফল হওয়ায় তা সহ্য করতে না পেরে সরকারি দল পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়।
স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে ঘটনার পর শহরে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। সারা শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
উল্লেখ্য, এনসিপির জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি ১ জুলাই থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় চলছে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণের মধ্যে ‘জুলাই সনদের বার্তা’ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে তারা রাস্তায় নেমেছে বলে জানিয়েছেন নেতারা। গোপালগঞ্জে এদিনের রক্তাক্ত সংঘর্ষে নিহতদের স্মরণে দেশব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে দলটি।