প্রকাশ: ৫ জুন ২০২৫, ১৯:৫২
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে কোরবানির পশু জবাইয়ের পর মাংস কাটার কাজে ব্যবহৃত তেঁতুল কাঠের খাইটার চাহিদা হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে। এলাকায় খাইটার দোকানগুলোতে ব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো। বছরের এই সময়টিতে যারা খাইটা তৈরি ও বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত, তাদের কাছে এটি যেন আশীর্বাদের মৌসুম।
তেঁতুল কাঠের খাইটা দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই হওয়ায় গ্রামের মানুষসহ শহরের বাসিন্দারাও এটি পছন্দ করেন। কারণ পশু জবাইয়ের পর মাংস কাটাকাটিতে তেঁতুল কাঠের খাইটা সহজে ভাঙে না, ধার ভালো থাকে এবং দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায়। এই গুণগত বৈশিষ্ট্যের কারণে প্রতি বছর কোরবানির ঈদের আগে এ খাইটার চাহিদা একপ্রকার দ্বিগুণ হয়ে যায়।
উপজেলার গুয়াপাড়া এলাকার খাইটা প্রস্তুতকারী শিহাব উদ্দিন জানান, তিনি বছরে একবারই বেশি লাভ করেন ঈদুল আজহার সময়। তার ভাষায়, “তেঁতুল কাঠের চাহিদা বেশি থাকায় আমরা আগে থেকেই কাঠ সংগ্রহ করে রাখি। এবারও আগের বছরের তুলনায় চাহিদা বেশি, দামও একটু বেড়েছে।”
প্রতিটি খাইটার দাম আকার ও কাঠের মানভেদে ২৫০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান বিক্রেতারা। কেউ কেউ আগাম অর্ডার নিচ্ছেন, কেউ আবার নিজে গিয়ে হাটে বসে বিক্রি করছেন। ক্রেতাদের মধ্যে যেমন গৃহিণীরা আছেন, তেমনি মাংস কাটার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরাও নির্দ্বিধায় তেঁতুল কাঠকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন।
এই চাহিদাকে সামনে রেখে অনেকেই মৌসুমি ব্যবসায় নেমেছেন। কেউ কেউ নিজেই কাঠ সংগ্রহ করে খাইটা বানিয়ে বিক্রি করছেন স্থানীয় বাজারে। এতে যেমন খরচ কমছে, তেমনি লাভও তুলনামূলক বেশি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন খাইটা ব্যবসায়ীরা।
তবে চাহিদা পূরণে যদি কাঠের সরবরাহ ব্যাহত হয়, তাহলে বিপাকে পড়তে পারেন খাইটা প্রস্তুতকারকরা। এজন্য আগেভাগেই প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অভিজ্ঞ ব্যবসায়ীরা।
অন্যদিকে, স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, খাইটার এই চাহিদা সাময়িক হলেও এটি একটি লোকজ শিল্পের প্রতিচ্ছবি। প্রয়োজনে এই শিল্পকে আরও উৎসাহিত করা উচিত যেন ভবিষ্যতেও এর বিকাশ অব্যাহত থাকে।