প্রকাশ: ৪ জুন ২০২৫, ১৬:৪১
পিরোজপুরের কাউখালীতে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ পুনরায় চালুর দাবিতে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে এক ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টায় উপজেলা হাসপাতাল সড়কের সামনে এই কর্মসূচিতে কয়েক হাজার মানুষ ব্যানার হাতে অংশ নেন।
২০০৮ সালে ৩১ শয্যার হাসপাতালটিকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করার জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। মূল ভবন ও দুটি আবাসিক ভবন নির্মাণে প্রায় পাঁচ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিয়ে দরপত্র আহ্বান করা হলেও তৎকালীন প্রতিমন্ত্রীর ভাই প্রভাব খাটিয়ে কাজটি নূরিয়া এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে নেন।
ওই ঠিকাদার কাজের মাত্র ২০ শতাংশ সম্পন্ন করে বিল তুলে নেন এবং বাকি কাজ ফেলে পালিয়ে যান। সিডিউল অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে কাজ না হওয়ায় ২০১৪ সালে তাদের কার্যাদেশ বাতিল করা হয় এবং ২০২৪ সালের ২১ এপ্রিল দুর্নীতি দমন কমিশন তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
পরবর্তীতে ২০২২ সালে কহিনুর এন্টারপ্রাইজ নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠান নতুন করে ২৫ কোটি ১১ লাখ টাকার কার্যাদেশ পেলেও এক বছরের মধ্যে কাজ শেষ না করে আবারও কাজ ফেলে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
ফলে দীর্ঘ দেড় দশক ধরে কাউখালীর দেড় লক্ষাধিক মানুষ সঠিক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বর্তমানে স্থানীয় প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের সহায়তায় জরাজীর্ণ টিনশেড ভবনে অস্থায়ীভাবে চিকিৎসা সেবা চালানো হচ্ছে।
সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় টর্নেডো সেই টিনশেড স্থাপনাতেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে। ফলে রোগী ও চিকিৎসকদের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম আহসান কবীর, জামায়াত নেতা ছিদ্দিকুল ইসলাম, বিএনপির জিয়াউল হাসান নিক্সন, নারী নেত্রী সুনন্দা সমদ্দার, সাংবাদিক রতন কুমার দাসসহ অনেকেই বক্তব্য দেন।
তারা ঘোষণা দেন, আগামী ৩০ জুনের মধ্যে নতুন ভবনের কাজ শুরু না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে, যাতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিলও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।