প্রকাশ: ৮ মে ২০২৫, ১৮:৫৮
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের গহীন অরণ্যে সন্ত্রাস, মাদক ও অপহরণ প্রতিরোধে যৌথ বাহিনী বৃহৎ আকারে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করেছে। পাঁচ শতাধিক সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত এ অভিযানে অংশ নেয় র্যাব, সেনাবাহিনী, পুলিশ, এপিবিএন, বিজিবি এবং বনবিভাগ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ মাদক ও দেশীয় অস্ত্র।
গত তিন মাসে উখিয়া-টেকনাফ এলাকায় অপহরণ ঘটনার সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে চলেছে। এসময়ে এই দুই উপজেলায় প্রায় ৩০টি অপহরণের ঘটনা ঘটেছে, যেগুলোর বেশিরভাগই সংঘটিত হয়েছে গহীন অরণ্যে। এসব এলাকাকে অপরাধীরা নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল। গোপন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু সন্ত্রাসীদের অস্থায়ী আস্তানা শনাক্ত করে।
অভিযান চলাকালে উদ্ধার করা হয়েছে ১০০ গ্রাম গাঁজা, ২ হাজার ৫০ পিস ইয়াবা, ২টি এলজি, একটি ওয়ান শুটার গান, ১১টি গুলি, অস্ত্র তৈরির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ, ৪টি রামদা, ২টি ছুরি, একটি চাকু এবং ৩টি কিরিচ। এসব সামগ্রী প্রমাণ করে এলাকাটি অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে ছিল এবং তারা দীর্ঘদিন ধরে এখানেই কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল।
র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. কামরুল হাসান জানিয়েছেন, টেকনাফ ও উখিয়ার নির্জন এলাকাগুলো বিশেষ করে শ্যামলাপুর, কুদুমগুহা, রঙ্গীখালী ও জালিয়া পাড়া দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসীদের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এসব দুর্গম অঞ্চলে নিয়মিত অভিযান চালানো না হলে অপরাধীরা ফের শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে।
যৌথ অভিযানে কোন সন্ত্রাসী বা অপহরণকারীকে গ্রেফতার করা না গেলেও, নিরাপত্তা বাহিনীর এমন পদক্ষেপে সাধারণ মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করেছে। সচেতন মহল মনে করছে, এমন ধারাবাহিক অভিযানই পারে উখিয়া-টেকনাফ অঞ্চলের মাদক ও অপহরণ রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে।
স্থানীয়রা জানান, এমন অভিযান আরও জোরদার করা প্রয়োজন। কারণ অরণ্যের গভীরে বহুদিন ধরে সন্ত্রাসী চক্রের অবাধ বিচরণ থাকায় মানুষজন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। সাধারণ জনগণ চায়, অভিযানের ধারাবাহিকতা বজায় থাকুক এবং অপরাধীরা শাস্তি পাক।
র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, ভবিষ্যতেও এলাকায় নিয়মিত অভিযান চালানো হবে যাতে করে কেউ পুনরায় গহীন অরণ্যকে অপরাধের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার না করতে পারে। জনগণের সহযোগিতা নিয়ে এসব দুর্বৃত্তদের নির্মূলের অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেছে কর্তৃপক্ষ।