প্রকাশ: ৩ মে ২০২৫, ২০:৩
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নে নির্মাণাধীন একটি ব্রীজ প্রকল্প থেকে চোরাই পথে ১২টি রেল লাইনের খুঁটি বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদার ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানি হলে অভিযুক্তরা রাতের আঁধারে ৬টি খুঁটি ফেলে গেলেও বাকি খুঁটি উদ্ধারে প্রশাসনের কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।
পারিশামারী হাই স্কুলের সামনে পূর্বে কাঠের সাঁকো নির্মাণে রেল লাইনের খুঁটি ব্যবহার করা হয়েছিল। ওই সাঁকো ভেঙে নতুন ব্রীজ নির্মাণের জন্য সরকারি বরাদ্দে কাজ শুরু হয়। এ সময় পুরনো রেল পাটির মোট ১৮টি খুঁটি তুলে ফেলা হয়, যার মধ্যে ১২টি চোরাইভাবে বিক্রি করা হয় বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
বুধবার রাতে সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গেলে দেখতে পান তিনটি খুঁটি ব্রীজের পাশে পড়ে আছে এবং খালের অপর পাড়ে আরও তিনটি খুঁটি রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১২টি খুঁটি বড় চাকার গাড়িতে করে গরালী বাজারে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করা হয়।
ভ্যেকু মেশিনের ঠিকাদার মইজুদ্দীন জানান, মেশিন চালানোর আগে কিছু খুঁটি সরানো হয়েছিল এবং তিনি সন্ধ্যায় সাতটি খুঁটি তুলেছিলেন, যেখান থেকে সকালে চারটি খুঁটি নিখোঁজ দেখা যায়। তবে তিনি চুরির অভিযোগ অস্বীকার করেন। একই রাতে গোপনে ছয়টি খুঁটি ফেরৎ ফেলা হয় বলে তিনি জানান।
এক শ্রমিক জানান, মইজুদ্দীনের নেতৃত্বে স্থানীয় দুই প্রভাবশালী নেতা ও তাদের আত্মীয়দের সহযোগিতায় ভ্যেকু মেশিন দিয়ে খুঁটিগুলো তোলা হয় এবং পরে আলমসাধুতে তুলে পাচার করা হয়। চোরাই মাল বিক্রির প্রক্রিয়াতেও তাদের সম্পৃক্ততা ছিল বলে তিনি দাবি করেন।
খুঁটি চুরির ঘটনায় স্থানীয় জনগণ হতাশা প্রকাশ করেছে। তারা অভিযোগ করেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও কোনো তদন্ত বা উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়নি। সংবাদ প্রকাশ ও আংশিক খুঁটি ফেরত আসলেও অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া গভীর উদ্বেগজনক।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম জানান, তিনি ঠিকাদারকে পূর্বে বলেছিলেন পুরনো মালামাল ইউনিয়ন পরিষদের জিম্মায় রাখতে। তবে চুরি বা উদ্ধার বিষয়ে তাকে কেউ অবহিত করেনি। তিনি এলাকায় গিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।