ভারত থেকে চাল আমদানির নির্ধারিত সময়সীমার শেষ দিনে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ৩২৫৭ মেট্রিক টন ৭৫০ কেজি চাল আমদানি হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ভারতীয় ৮০টি পণ্যবাহী ট্রাকে এসব চাল দেশে প্রবেশ করে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে আমদানির সময়সীমা বাড়ানো না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা।
হিলি স্থলবন্দরের চাল আমদানিকারক মোঃ মোস্তাক হোসেন জানান, “সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ ছিল ভারত থেকে চাল আমদানির শেষ দিন। সময়সীমা না বাড়ালে দেশের বাজারে এর সরাসরি প্রভাব পড়বে।” তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ব্যবসায়ীরা অনেক আগেই এলসি ও ওপারে স্লট বুকিং করে রেখেছেন। কিন্তু শেষ দিনে সব ট্রাক প্রবেশ করতে না পারলে এবং ভারতের দিক থেকে পাইপলাইনে থাকা ট্রাক আটকা থাকলে ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বেন।
এ বিষয়ে হিলি আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাজমুল হক বলেন, “আমরা সময় বৃদ্ধির জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছি। তবে আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো অনুমোদন পাওয়া যায়নি। ভারত থেকে চাল আমদানি বন্ধ হলে একদিকে যেমন বাজারে চালের সরবরাহ কমে যাবে, অন্যদিকে সরকারের রাজস্বেও ঘাটতি দেখা দেবে।”
তিনি আরও বলেন, “আজকের দিন শেষে মোট ৮০টি ভারতীয় ট্রাকে ৩২৫৭ মেট্রিক টন ৭৫০ কেজি চাল আমদানি করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা তাদের এলসি অনুযায়ী বেশিরভাগ চাল আমদানি সম্পন্ন করেছে বলে জানি। তবে ওপারে পাইপলাইনে কোনো ট্রাক আটকা রয়েছে কি না, সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই।”
হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা মোঃ শফিউল ইসলাম বলেন, “আমাদের কাছে আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত চাল আমদানির সময়সীমা বৃদ্ধির কোনো চিঠি আসেনি। ফলে সময় বাড়বে বলে মনে হচ্ছে না। ভারতের সঙ্গে যেসব এলসি খোলা হয়েছিল, তার সীমাবদ্ধতার মধ্যেই চাল আমদানি শেষ করতে হবে।”
অন্যদিকে, একই দিন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) একটি গেজেট প্রকাশ করে জানায়, ভারত থেকে সুতা আমদানি সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে। বেনাপোল, ভোমরা, বুড়িমারীসহ দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।
উল্লেখ্য, গতকাল ১৪ এপ্রিল হিলি স্থলবন্দর দিয়ে রেকর্ডসংখ্যক ২০১টি ট্রাকে প্রায় ৮৪৫০ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছিল, যা এক দিনের হিসেবে অনেক বেশি।
এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা দ্রুত সময়সীমা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে বলেছেন, “সরকার যদি এলসি করা চালগুলো দেশে আনতে সময় না দেয়, তাহলে আমদানিকারকরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তেমনি বাজারে চালের দামও অস্থির হয়ে উঠতে পারে।”