প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৫, ১২:৩২
বাংলাদেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচিত শিল্পখাতকে সচল রাখতে গ্যাস সরবরাহে গতি আনছে সরকার। গ্যাসের ঘাটতি ও উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় চলমান উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার বুধবার (২৮ মে) থেকে শিল্প খাতে অতিরিক্ত ১৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ শুরু করবে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।
সোমবার (২৬ মে) এক বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে মন্ত্রণালয় জানায়, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত গড় সরবরাহ ছিল ৮২৩ মিলিয়ন ঘনফুট, যা চলতি বছরের একই সময়ে দাঁড়িয়েছে ৯৯৭ মিলিয়ন ঘনফুটে।
অর্থাৎ, শিল্পখাতে গ্যাস সরবরাহে গত বছরের তুলনায় ২১ শতাংশ বৃদ্ধি ঘটেছে। পাশাপাশি গ্যাস সরবরাহ স্থিতিশীল রাখতে ছয়টি অতিরিক্ত এলএনজি কার্গো আমদানি করা হয়েছে, যার গড় মূল্য প্রতি ঘনমিটারে ৬৫ টাকা। এতে করে গ্যাসের জোগান নিয়মিত রাখা এবং উৎপাদন অব্যাহত রাখার চেষ্টা চলছে।
সরকার জানিয়েছে, রপ্তানিনির্ভর শিল্পের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং বিভ্রান্তি দূর করতে এই ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে। এ অবস্থায় সরকারি পক্ষ থেকে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে, বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী তথ্য উপেক্ষা করে ব্যবসায়ীরা আস্থা ফিরে পাবেন।
অন্যদিকে, ব্যবসায়ী নেতারা গ্যাস সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানগুলো গ্যাস সংকটে ভুগছে, যার ফলে টেক্সটাইল ও পোশাক শিল্পে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
তাদের দাবি, বর্তমানে গ্যাসের চাপ এতটাই কম যে অনেক কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম পুরোপুরি থেমে গেছে। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ হুমকির মুখে পড়বে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, উৎপাদন বিঘ্নিত হলে রপ্তানি কমে যাবে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে অর্থনীতি আরও সংকটে পড়বে এবং ব্যাংক ঋণ ও শ্রমিক বেতন দিতে গিয়ে মালিকরা বিপাকে পড়বেন।
এই অবস্থায় শিল্প খাতের গ্যাস সরবরাহ স্থিতিশীল রাখা এবং রপ্তানি সক্ষমতা ধরে রাখতে সরকারের ঘোষিত পদক্ষেপ দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরি।