পটুয়াখালী জেলার বাউফলের বিলবিলাস গ্রামে জমি-সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে হামলা, মারধর ও মাছ লুটের অভিযোগে যুবদল নেতা ফরিদ গাজীকে (৩৮) গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি বিশেষ ইউনিট। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) দিবাগত রাতে মামলার ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রাত ১১টার দিকে ফরিদ গাজীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তার আগেই ভুক্তভোগী পক্ষ থেকে বাউফল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে ওই অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
অভিযোগকারী পরিবারের সদস্যরা জানান, বিলবিলাস গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মিজানুর রহমান বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। তার অনুপস্থিতিতে তার ভাতিজা কবির খান জমির দখল নিতে রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করছেন। যদিও বিরোধটি স্থানীয় সালিশ ও আদালতের আওতায় রয়েছে, তারপরও ঘটনাটি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টার রূপ নেয়।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, বুধবার গভীর রাতে মিজানুর রহমানের বসতবাড়িতে অতর্কিত হামলা চালানো হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক লাঠিয়াল এবং বর্তমানে যুবদলের সক্রিয় নেতা ফরিদ গাজী। তার নেতৃত্বে হামলাকারীরা মিজানুরের পরিবারের সদস্যসহ প্রতিবেশী কয়েকজন বৃদ্ধ সদস্যকে মারধর করে। একই সঙ্গে বাড়ির পাশের পুকুর থেকে মাছ লুট করে নিয়ে যায়।
মিজানুর রহমানের স্ত্রী দেলোয়ারা বেগম জানান, ঘটনার পর থানায় এজাহার দিতে গেলে স্থানীয় ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক মুজাহিদুল ইসলামসহ কয়েকজন তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন ফরিদ গাজীর নাম বাদ দিতে। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, বিষয়টি পারিবারিকভাবে সালিশের মাধ্যমে সমাধানের প্রস্তাব দেওয়া হয়।
তবে দেলোয়ারা বেগমের দাবি, এটি ছিল মূলত হুমকি ও প্রভাব খাটানোর কৌশল। তিনি বলেন, “সালিশের নামে পুরো ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমরা ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায় রয়েছি, তবুও ন্যায়বিচারের আশায় মামলা করেছি।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা মুজাহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা কেবল বলেছি ২০ তারিখে পারিবারিক সালিশ আছে। তাই নিজেদের মধ্যে মীমাংসার চেষ্টা করা হোক। কাউকে ভয় দেখানো হয়নি।”
বাউফল থানা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযোগটি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদেরও শনাক্ত করার চেষ্টা করছে।