প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮:৭
দিনাজপুরের পার্বতীপুরে অবস্থিত বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেছে। শেষ চালু থাকা ইউনিটেও যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় গতকাল মঙ্গলবার থেকে কেন্দ্রটির সব ইউনিটের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এতে উত্তরাঞ্চলে বড় ধরনের বিদ্যুৎ বিভ্রাটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বড়পুকুরিয়া কয়লা ভিত্তিক এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রাখে। তিনটি ইউনিটের মধ্যে ১ ও ২ নম্বর ইউনিট ১২৫ মেগাওয়াট করে এবং ৩ নম্বর ইউনিট ২৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম ছিল। তবে ২ নম্বর ইউনিট দীর্ঘদিন ধরে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ ছিল। চলমান ছিল ১ ও ৩ নম্বর ইউনিট। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ৩ নম্বর ইউনিটও ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে যায়, এরপর ১ নম্বর ইউনিট চালু ছিল।
সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ১ নম্বর ইউনিটের বয়লারে লিকেজ ধরা পড়ে। এতে ইউনিটটি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। ফলে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব ইউনিট একসঙ্গে বন্ধ হয়ে যায়। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কেন্দ্রটি পুনরায় চালু করতে ৮ থেকে ১০ দিন সময় লাগতে পারে।
বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, বয়লারের টিউব ফেটে যাওয়ায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। যেহেতু বয়লারের তাপমাত্রা প্রায় ১ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস, তাই এটি ঠান্ডা হওয়ার পরই মেরামতের কাজ শুরু করা হবে। তিনি আশা করছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে ইউনিটগুলো পুনরায় চালু করা সম্ভব হবে।
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। গ্রিডে বিদ্যুতের ঘাটতির কারণে লোডশেডিং আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইতোমধ্যে এলাকাবাসী দীর্ঘ লোডশেডিংয়ের শিকার হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এদিকে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে কলকারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং কৃষি সেচ ব্যবস্থায় বিদ্যুতের অভাব বড় প্রভাব ফেলতে পারে। স্থানীয়রা দ্রুত কেন্দ্রটির মেরামত সম্পন্ন করে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার দাবি জানিয়েছেন।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিদ্যুৎ উৎপাদন স্বাভাবিক করতে দ্রুত কাজ করা হচ্ছে। তবে যান্ত্রিক ত্রুটি সম্পূর্ণ ঠিক না হওয়া পর্যন্ত উৎপাদন শুরু করা সম্ভব নয়। এই অবস্থায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট এড়াতে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।