শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জে একদিনে উদ্ধার অজগর ও তিন গন্ধগোকুল ছানা

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলায় একদিনের ব্যবধানে দুটি ব্যতিক্রমী বন্যপ্রাণী উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের নওয়াগাঁও দেবপাড়া এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি বিশাল আকৃতির অজগর সাপ, যেটি স্থানীয় এক পরিবারের হাঁস গিলে ফেলেছিল। একই দিনে কমলগঞ্জ উপজেলার বড়চেগ এলাকা থেকে বিলুপ্তপ্রায় তিনটি গন্ধগোকুলের বাচ্চাও উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।

স্থানীয় বাসিন্দা ধনাই মিয়ার পুকুরপাড়ে হাঁসের অস্বাভাবিক শব্দ শুনে পরিবারের সদস্যরা এগিয়ে যান এবং দেখেন একটি অজগর একটি হাঁস গিলে ফেলছে। পরে তারা শ্রীমঙ্গলের বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছে অজগরটি উদ্ধার করেন এবং পরে বনবিভাগের হাতে হস্তান্তর করেন।

অজগরটির বিষয়ে স্বপন দেব জানান, এটি প্রায় ৮ থেকে ৯ ফুট লম্বা এবং সম্পূর্ণ সুস্থ ছিল। তিনি বলেন, খাদ্যের অভাবে এবং বাসস্থানের সংকটে পড়ে বন্যপ্রাণীরা প্রায়ই লোকালয়ে চলে আসছে, যা মানুষের নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করে। তবে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করলে প্রাণীগুলোকে সুস্থভাবে প্রকৃতিতে ফিরিয়ে দেওয়া যায়।

অন্যদিকে, কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের বড়চেগ গ্রামে একটি বাড়িতে তিনটি গন্ধগোকুলের বাচ্চা আটকানোর খবর পায় বন বিভাগ। সেখান থেকে প্রাণীগুলো উদ্ধার করে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের জানকিছড়া ওয়াইল্ডলাইফ রেসকিউ সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়।

বন বিভাগের জুনিয়র ওয়াইল্ডলাইফ স্কাউট মো. তাজুল ইসলাম জানান, ছানাগুলোর বয়স এক মাসের কিছু বেশি হওয়ায় তারা এখনও সম্পূর্ণ আত্মনির্ভরশীল নয়। তাই পরিচর্যা শেষে উপযুক্ত সময়ে এগুলোকে প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হবে।

এই উদ্ধার অভিযানে সহযোগিতা করে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে কাজ করা সংগঠন সিউ (Stand for Our Endangered Wildlife)। সংগঠনটির সহপ্রতিষ্ঠাতা সোহেল শ্যাম জানান, একটি ফেসবুক পোস্ট দেখে খবর পেয়ে তারা বন বিভাগকে জানান এবং একসঙ্গে উদ্ধার অভিযানে অংশ নেন।

বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ জানিয়েছে, এ ধরনের প্রাণী উদ্ধার অভিযান শুধু বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্যই নয়, মানুষের নিরাপত্তার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জনসচেতনতা বাড়ালে ভবিষ্যতে প্রাণীদের সুরক্ষা আরও ভালোভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।