প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৭:২৪
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর স্কুলপাড়ার দুই প্রতিবন্ধী তরুণের জীবন চলছে কঠিন বাস্তবতার মধ্য দিয়ে। শুধুমাত্র প্রতিবন্ধী ভাতা ছাড়া তেমন কোনো সাহায্য মেলেনি তাদের ভাগ্যে। গরিব পরিবারের সন্তান হওয়ায় উন্নত চিকিৎসা করানোর সুযোগও পায়নি তারা। ফলে চার দেয়ালের মধ্যেই বন্দি জীবন কাটছে আকাশ কুমার প্রামাণিক ও দীপন সূত্রের।
কাশিমপুর ইউনিয়নের স্কুলপাড়ার দিনমজুর নয়ন প্রামাণিকের ছেলে আকাশ জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। অর্থের অভাবে চিকিৎসার সুযোগ না পাওয়ায় ২৮ বছর ধরে পরিত্যক্ত ঘরেই কাটছে তার জীবন। ঘরেই খাওয়া, প্রসাব-পায়খানা সবকিছু করতে হয় তাকে। শুধু একটি ছোট জানালা দিয়ে বাইরের আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে আকাশ।
তার মা অলোকা রানী বলেন, উন্নত চিকিৎসা পেলে হয়তো ছেলেকে সুস্থ করা যেত, কিন্তু গরিব মানুষ হওয়ায় পরিবারের অন্যদের খাবার জোগানোই কষ্টকর। আকাশ শুধু প্রতিবন্ধী ভাতা পায়, কোনো শীতের কম্বল বা অন্য সহায়তা পায়নি কখনো। যদি চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা পাওয়া যেত, তাহলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতাম।
আকাশের বাড়ির পাশেই বসবাস করে আরেক প্রতিবন্ধী তরুণ দীপন সূত্র। জন্ম থেকেই শারীরিকভাবে অক্ষম এই তরুণের বাবা একজন ভ্যানচালক। হুইলচেয়ারে করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিতে হয় তাকে। উন্নত চিকিৎসার সুযোগ পেলে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করে তার পরিবার।
দীপনের মা চন্দনা নমসূত্র বলেন, ছেলেকে সুস্থ করতে অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু ব্যয়বহুল চিকিৎসা চালানো আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। শুধু প্রতিবন্ধী ভাতার ওপর নির্ভর করেই চলতে হয়। সরকারের পক্ষ থেকে যদি কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়, তাহলে উন্নত চিকিৎসার চেষ্টা করতাম।
রাণীনগর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম কচি জানান, এই দুইজন প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন। ভবিষ্যতে যদি উন্নত চিকিৎসার কোনো সুযোগ আসে, তাহলে তাদের সেই সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক নূর মোহাম্মদ জানান, প্রতিবন্ধী সহায়তা কেন্দ্র থেকে তারা চাইলে হুইলচেয়ার পেতে পারেন। তাদের পরিবার আবেদন করলে উন্নত চিকিৎসার জন্যও যথাসম্ভব সহযোগিতা করা হবে।
আকাশ ও দীপনের পরিবার সরকারি সহায়তা পেলে তাদের জন্য ভালো চিকিৎসা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে আশা করছে স্থানীয়রা। তবে এখনো তারা অপেক্ষায়, কবে মিলবে কাঙ্ক্ষিত সহায়তা।