প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১:২৫
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ঝাকুয়াটারী সীমান্তের শূন্য রেখায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কর্তৃক স্থাপিত সিসি ক্যামেরা অপসারণের আশ্বাস দিয়েছে বিএসএফ। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) এবং বিএসএফের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক পতাকা বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কুড়িগ্রাম ব্যাটালিয়ন ২২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল মুহাম্মদ মাসুদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে বিএসএফ কুড়িগ্রামের ঝাকুয়াটারী সীমান্তের শূন্য রেখায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে। এ ঘটনার পর থেকে সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয়রা বিষয়টি দেখতে পেয়ে দিয়াডাঙ্গা বিজিবি ক্যাম্পকে জানান। পরে বিজিবি ভারতের কোচবিহার জেলার সাহেবগঞ্জ থানার ছোটো গারাল ঝোরা বিএসএফ ক্যাম্পকে সিসি ক্যামেরা অপসারণের আহ্বান জানায়। তবে সে সময় বিএসএফ ক্যামেরা অপসারণ করেনি, যার ফলে উভয় বাহিনীর মধ্যে কয়েক দফা আলোচনা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিএসএফ ঝাকুয়াটারী সীমান্তের আন্তর্জাতিক সীমানা পিলার ৯৭৮-এর সাব পিলার ৯-এর পাশে ভারতের একটি ইউক্যালিপটাস গাছে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে।
এই স্থানের কাছেই একটি মসজিদ রয়েছে, যেখানে বাংলাদেশ ও ভারতের মুসল্লিরা একসঙ্গে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন। ফলে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কারণে মুসল্লিদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহাদত হোসেন বলেন, "বিএসএফ মসজিদের পাশের গাছে বাংলাদেশের দিকে তাক করে সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছে। এতে আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছি।"
সীমান্তের এই উত্তেজনা নিরসনে মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে দুই ঘণ্টাব্যাপী পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন কুড়িগ্রাম ব্যাটালিয়ন ২২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল মুহাম্মদ মাসুদুর রহমান এবং ভারতের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেন বিএসএফের ১৬২ ব্যাটালিয়নের কমান্ডার শ্রী অনিল কুমার।
বৈঠকে বিজিবি সিসি ক্যামেরা স্থাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং তা সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানায়। পরে বিএসএফ সিসি ক্যামেরা অপসারণের আশ্বাস দেয়।
কুড়িগ্রাম ব্যাটালিয়ন ২২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল মুহাম্মদ মাসুদুর রহমান বলেন, "বিএসএফ শূন্য রেখায় স্থাপিত সিসি ক্যামেরা অপসারণের বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছে। আমরা এ বিষয়ে নজর রাখছি এবং প্রয়োজনে আরও আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হবে।"
বিজিবি ও বিএসএফ উভয় পক্ষই সীমান্তের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করে। ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে উভয় বাহিনীর মধ্যে আলোচনা চালানোর প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করা হয়।