প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ২২:২৪
বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের ভূমিকা নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, চীন বাংলাদেশের উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে কাজ করছে। তিনি জানান, ১৯৭৬ সাল থেকে চীন বাংলাদেশের বিভিন্ন বড় প্রকল্পে সহায়তা প্রদান করে আসছে। বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু নির্মাণে চীনের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা একটি বড় মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, যা দক্ষিণবঙ্গের প্রায় ৫.৫ কোটি মানুষের জীবনযাত্রা সহজ করেছে।
ডা. শফিকুর রহমান গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুরে চীন এবং জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে খাদ্যসামগ্রী ও কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বলেন, চীন বাংলাদেশের উন্নয়নে একটি নির্ভরযোগ্য এবং বিশ্বস্ত অংশীদার। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সম্মেলন কেন্দ্র, চীন-বাংলাদেশ সম্মেলন কেন্দ্র, চীনের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং পরবর্তীতে এটি বাংলাদেশের জনগণের জন্য উপহার হিসেবে প্রদান করা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে, তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং চীনের জনগণকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে মুসলিম জাতির ঐতিহ্যগত সম্পর্ক রয়েছে এবং এই সম্পর্কটি আরও সুদৃঢ় হওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। চীন থেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা বাংলাদেশে এসে সমাজ উন্নয়নে অবদান রেখেছেন, আবার বাংলাদেশের জ্ঞানী ব্যক্তিরাও চীনে গিয়ে সেখানে তাদের জ্ঞান ও প্রযুক্তি শিখেছেন। ডা. শফিকুর রহমান আশা করেন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের আরও এক নতুন অধ্যায় শুরু হবে, যেখানে ভাষাগত বন্ধন আরও দৃঢ় হবে।
এছাড়া, তিনি বলেন, চীন সরকার ইতোমধ্যে বাংলাদেশে বিভিন্ন কল্যাণমূলক কাজের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশে চাইনিজ ভাষা শিক্ষার একটি একাডেমি প্রতিষ্ঠা করতে পারে। তিনি আশা করেন, এর মাধ্যমে ভবিষ্যত প্রজন্ম চীনের সঙ্গে আরও গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, চীন আজ বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় দেশ যেখানে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং প্রকৌশলে নেতৃত্ব দেয়। তিনি উল্লেখ করেন, চীন থেকে বাংলাদেশের জন্য অনেক কিছু শেখার রয়েছে এবং এই সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ আরও উন্নত হবে। তিনি চীনের রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে চীন সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
তিনি আরো বলেন, চীনের প্রতিনিধি দলের মাধ্যমে বাংলাদেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদদের চীনে আমন্ত্রণ জানানো উচিত, যাতে তারা আরও ভালোভাবে চীন সম্পর্কে জানতে পারে এবং সমাজে অর্থপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
এ সময় চীনা রাষ্ট্রদূত এইচ ই ইয়াও ওয়েন বলেন, চীন সরকার গাজীপুরের জনগণের জন্য কিছু শীতের কম্বল এবং খাদ্যসামগ্রী প্রদান করেছে। শীতকালে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় অনেক মানুষের জীবনযাত্রা দুরূহ হয়ে পড়ে, এই কম্বল শীত নিবারণের জন্য সহায়ক হবে।
তিনি বলেন, চীন সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য বিভিন্ন ধরনের সাহায্য প্রদান করতে প্রস্তুত এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন ও বাংলাদেশের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে বন্ধুত্বপূর্ণ এবং উন্নয়নশীল। এই সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হতে থাকবে, যা উভয় দেশের জন্য উপকারী হবে।
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এবং চীনের জনগণের মধ্যে সহযোগিতা এবং বন্ধুত্বের সম্পর্ক অনেক দিনের এবং এটি ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী হবে। চীন সরকারের সহায়তায় বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে, এবং তিনি আশা করছেন, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে, বিশেষ করে আগামী দিনে আরও কার্যকরভাবে কাজ করতে পারবে উভয় দেশ।
এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং চীনের প্রতিনিধিরা। তারা সবাই একসাথে এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন এবং বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের উন্নতির জন্য আরও একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান এর শেষ বক্তব্যে বলেন, চীনের সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য অনেক কিছু করেছে এবং ভবিষ্যতেও আরও অনেক কিছু করবে। তিনি আশা করেন, এই সহযোগিতা বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং উভয় দেশের সম্পর্ক আরও জোরালো হবে। তিনি আরও বলেন, চীনের জনগণের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের কৃতজ্ঞতা জানানো উচিত এবং ভবিষ্যতে এই সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।