প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৪, ২৩:৪৯
পাথরঘাটার ১১৯ নং পশ্চিম তালুকের চরদুয়ানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভা চলাকালীন সময় তুষার মজুমদার নামক এক অভিভাবকের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। এক সপ্তাহ পাড় হলেও ওই ঘটনার কোনো বিচার করেনি বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক। ঘটনায় ক্ষুব্দ অভিভাবকরা সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে অনিহা প্রকাশ করে টিসি চেয়েছে।
১০ মার্চ দুপুরে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখাগেছে অধিকাংশ শিশু শিক্ষার্থীরা ক্লাসে আসেনি। এর কারন অনুসন্ধানে জানা যায় ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে বৈরীতা করে ওই বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক কমলেশ গোলদার ঘটনাটির কোনো ব্যবস্থা গ্রহন না করেই ধামাচাপা দেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
এর আগে গত সোমবার দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যালয়ের সভাকক্ষে একটি অনিয়মের বিষয়ে সভা চলাকালে বহিরাগত স্থানীয় ওহাব আলীর ছেলে শিপন অভিভাবক তুষারের উপর হামলা করে। হামলার ঘটনার সময় পুরো বিদ্যালয় এলাকায় এবং শিশু শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে।
তাৎক্ষণিক ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি আলী আজিম গাজী ৯৯৯ কল দিয়ে অভিযোগ জানালে সন্ত্রাসীরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। স্থানীয় ইউপি সদস্য সুমন শিকদার এবং প্রধান শিক্ষক কমলেশ বিষয়টির যথাযথ ব্যবস্থা করার কথা পুলিশ এবং অভিভাবকদের জানিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। কিন্ত ঘটনার এক সপ্তাহের মধ্যেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেন নি। ফলে প্রায় ২০জন অভিভাবকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ; এমন জঘন্য ঘটনার বিচার হয় না যে স্কুলে ;সেখানে আমাদের সন্তানদের পাঠাবো কি না ভাবতে হবে।
বিষয়টির কেনো রেজুলেশন কিংবা কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি কেন? বিদ্যলয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কমলেশের কাছে এই প্রশ্নের কোনো সদুত্তর পায়নি পাথরঘাটার সাংবাদিকেরা ।
এ ঘটনায় অভিভাবক পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিয়ামণির বাবা আজিজ দফাদার এবং শিক্ষর্থী শামিমার মা মকসুদা বেগম বলেন,অভিভাবক লাঞ্চিত'র ঘটনায় বিচার হয়না এবং নানা অনিয়মের জন্য আমারা সন্তানের টিসি চেয়েছি। এখানে আমার সন্তান রাখতে চাই না।
এ ঘটনার পর অভিযুক্ত শিপনের সাথে কথা বলার জন্য ফোন দিলে তিনি ফোনে কথা বলতে রাজী নন বলে জানিয়ে দেন। এবং তিনি বলেন "আমি দেখা করব"! এরপরেও তাকে ফোন দিলে ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি ।
হামলার শিকার তুষার মজুমদার বলেন,আমার সন্তানসহ অসংখ্য শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের সামনে আমার শার্টের কলার ধরে স্কুলের বাইরের লোক শিপন আমার উপরে হামলা করেছে। আমি বিচার চাই।
স্কুল ব্যারেজিং কমিটির সভাপতি বাসন্তী রানী বলেন, অভিভাবক তুষার আমার স্বামী। এছাড়াও তিনি একজন অভিভাবক। এই স্কুলের এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনা এই-ই প্রথম। যাতে ভভিষ্যতে এমনটি আর না ঘটে সেজন্য আমরা বসে বিষয়টিকে রেজুলেশনের আওতায় নিয়ে আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচারের দাবী করেছি। কিন্তু প্রধান শিক্ষক সহযোগিতা করছেন না।
ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি আলী আজিম গাজী বলেন, আমরা বিদ্যালয়ের একটি অনিয়মের ঘটনা নিয়ে বৈঠকে বসেছিলাম। সেই বৈঠকে বহিরাগত ব্যাক্তি এসে অভিভাবকের উপরে হামলা চালায়। যে ঘটনায় প্রধান শিক্ষক আমাদের অসহযোগিতা করেছে।
এ দিকে পাথরঘাটা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার টি এম শাহআলম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি হামলার ঘটনা শুনেই ওই স্কুলে দায়িত্বরত এ টি ও মোসাম্মাদ খাদিজা খানম ও রনজিদ চন্দ্র মিত্র কে ঘটনা স্থলে পাঠিয়েছি। তাদের তদন্ত রিপোর্ট এখনও পাইনি। পেলেই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।