প্রকাশ: ৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬:৫৯
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
নিজের স্ত্রীকে বাবা ধর্ষণ করছেন এমন দৃশ্য দেখে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন হাবিবুর রহমান নামের এক যুবক। রোববার গত ৫ ডিসেম্বর দুপুরে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার উত্তর তালুক পলাশী গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। হাবিবুর ওই গ্রামের মোকসুদার রহমানের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, উত্তর তালুক পলাশী গ্রামের মোকসুদার রহমানের ছেলে অটোচালক হাবিবুর রহমান তিন মাস আগে প্রতিবেশী এক মেয়ের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে নববধূ শ্বশুর বাড়িতেই অবস্থান করেন। স্বামী দিনের বেলায় অটো চালাতে বাইরে থাকেন। তার শাশুড়িও অন্যের বাড়িতে কাজে যাওয়ার সুবাদে শ্বশুর মোকসুদার রহমানসহ বাড়িতে থাকেন নববধূ।
গত সপ্তাহে নববধূ জ্বরে আক্রান্ত হলে ওষুধ এনে দেন শ্বশুর মোকসুদার রহমান। এ সময় নববধূকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে ধর্ষণ করেন। পরের দিনও শ্বশুর তাকে কুপ্রস্তাব দিলে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শ্বশুর মারপিট করলে চোখে আঘাত পান নববধূ। অবশেষে ইচ্ছার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফায় পুত্রবধূকে ধর্ষণ করেন লম্পট শ্বশুর মোকসুদার রহমান (৪৮)। এভাবে সপ্তাহ ধরে লাগাতার ধর্ষণের শিকার নববধূ বিষয়টি তার স্বামী ও শাশুড়িকে জানান।
শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) দিনে অটোরিকশা নিয়ে বের হয়ে কিছুক্ষণ পর বাড়ি ফিরে এসে নিজ চোখে বাবার অপকর্ম দেখে বাবার ওপর ক্ষিপ্ত হন ছেলে হাবিবুর রহমান। লম্পট বাবাকে ধাওয়া করেও আটক করতে পারেননি।
এ ঘটনায় রোববার (৫ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিয়ে বাবা ছেলের মাঝে পুনরায় বিতর্ক হলে নিজ বাড়িতে প্রকাশ্যে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান অটোচালক হাবিবুর রহমান। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
নির্যাতিতা নববধূ বলেন, ‘বাড়িতে কেউ না থাকায় প্রথম দিন ঘুমন্ত অবস্থায় শ্বশুর ধর্ষণ করেন। দ্বিতীয় দিন বাধা দেয়ায় চোখে ঘুসি মেরে আহত করে ধর্ষণ করেন। এভাবে ৭ দিন লাগাতার ধর্ষণ করেন। বিষয়টি স্বামী ও শাশুড়িকে জানিয়েছি। তারা প্রথমে বিশ্বাস করেননি। শেষ দিন স্বামী নিজেই দেখেছেন। এই ক্ষোভে স্বামী বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। তিনি লম্পট শ্বশুরের বিচার দাবি করেন।
এ ঘটনার পর থেকে বাড়িতে তালা দিয়ে সপরিবারে পালিয়েছেন লম্পট মোকসুদার রহমান।নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক একাধিক গ্রামবাসী জানান, লম্পট মোকসুদার রহমান অনেক মেয়ের এমন সর্বনাশ করেছেন। একাধিক গ্রাম্য বিচারে তাকে সতর্ক করা হলেও তার চরিত্রের কোনো সংশোধন হয়নি।আদিতমারী থানার ওসি (তদন্ত) মোজাম্মেল হক বলেন, ‘লোকমুখে শুনেছি শ্বশুর কর্তৃক নববধূ ধর্ষণের ঘটনাটি। তবে এখন পর্যন্ত লিখিত কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’