প্রকাশ: ২ অক্টোবর ২০২১, ৪:১৭
১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর জিয়াউর রহমান কর্তৃক সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিচারের নামে ফাঁসি দিয়ে হত্যা, লাশ গুম, কারাদণ্ড ও চাকরিচ্যুতির ঘটনার বিষয়ে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন করার দাবি করেছেন সেসব ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের স্বজনরা। শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তৎকালীন সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচারসহ ক্ষতিপূরণের দাবি জানানো হয়।
আলোচকরা অভিযোগ করেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার মূল কুশীলব জিয়া ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতেই মিথ্যা ক্যূ-এর অভিযোগ তুলে নীল নকশা বাস্তবায়ন করেন। ১৯৭৭ সালে একটি জাপানি বিমান ছিনতাই করে ঢাকায় আনে জাপান রেড আর্মির সদস্যরা। পরে সেই সংকট মিটে গেলেও ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামরিক অভ্যুত্থানের অভিযোগ আনা হয় বাংলাদেশ বিমান ও সেনা বাহিনীর শত শত সদস্যের বিরুদ্ধে।
তারা বলেন, তৎকালীন সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের নির্দেশে সামরিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড হয় ১৪০০ জনের। এছাড়া বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ও চাকুরিচ্যুত হন আরও অনেকে। এই ঘটনার পর ৪৪ বছর পেরিয়েছে। এই ৪৪ বছর ধরে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া সেসব হতভাগ্যদের পরিবারের সদস্যরা কবরের খোঁজ করে চলছেন। এখনো জানেন না কোথায় প্রিয়জনের শেষ ঠিকানা। কিংবা কিভাবে মারা গেছেন স্বামী বা প্রিয়তম সন্তান।
সে ঘটনায় বেচেঁ ফেরারা জানান, অবৈধ ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতেই মিথ্যা ক্যূ এর অভিযোগ তুলে জেনারেল জিয়াউর রহমান এই হত্যাকাণ্ড ঘটান। তখন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিরপরাধ শত শত মানুষকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া আলোচকরা ৪৪ বছর আগের সেই নৃশংস কোর্ট মার্শালের বিচার বিভাগীয় তদন্তের পাশাপাশি একটি কমিশন গঠনের তাগিদ দেন।
সভায় সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘দেশে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর থেকে বেশ কয়েকটি কলঙ্কজনক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তার মধ্যে ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবরের ঘটনা অন্যতম। প্রতিটি কলঙ্কময় দিনের মূল কুশিলব ছিলেন খুনি জিয়াউর রহমান।
প্রখ্যাত সাংবাদিক আবেদ খান বলেন, ‘জিয়াউর রহমান এক আদর্শহীন নায়ক। তিনি সকাল বেলা হত্যাকাণ্ডের খবর নিয়ে কাজ শুরু করতেন। তার একমাত্র বিশ্বাসের জায়গা ছিল পাকিস্তান। তার বিশ্বাসের জায়গা ছিল আইএসআই’।
অনুষ্ঠানে জিয়াউর রহমানের মরোনোত্তর বিচারসহ প্রধানমন্ত্রী বরাবর সাত দফা দাবি তুলে ধরেন ষড়যন্ত্রের শিকার সেনা সদস্যদের পরিবারের সদস্যরা।