প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৪, ০:৪৪
লাভের আশায় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আলুর আবাদ শুরু করেছিলেন নজমুল ইসলাম ।স্বপ্ন ছিল লাভের টাকায় ঋণ পরিশোধ করে সংসারে ফিরিয়ে আনবেন সফলতা৷ শুরুর দিকে আলু গাছের উর্বরতা দেখে খুশি ছিলেন তিনি৷ চলতি মাসের আট তারিখ ক্ষেতের পুষ্টি বাড়াতে "পিক' নামে একটি মাইক্রো পুষ্টি কীটনাশক ব্যবহার করেন তিনি। পরের দিন থেকে আলু খেতে পচন ও নষ্ট হওয়া শুরু হয়। তারপর থেকে দুশ্চিন্তায় সময় পার করছেন তিনি৷
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের মালিগাঁও গ্রামের বাসিন্দা নজমুল ইসলাম। আলু খেতের শেষ সম্বল হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পরেছেন তিনি৷
শুধু নাজমুল নন তার মতন একই গ্রামের আরো ১০ জন কৃষক এসএএম (SAM) এগ্রো কেমিক্যালের মাইক্রো ভিটামিন "পিক" কীটনাশক ব্যবহার করে আলু খেত নষ্টের অভিযোগ উঠেছে৷ সেই গ্রামের ১০ জন কৃষকের ৭ একর জমির আলুর খেতে পচন ধরেছে৷
সোমবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,আলুর গাছ গুলো মরে যাওয়া শুরু করেছে।আর আলুর শিকড়ে পচন ধরে সেগুলো নষ্ট হয়ে গিয়েছি। ক্ষেত এমন দূরাবস্থা দেখে দিকবিদিকশুন্য হয়ে পড়েছেন আলু চাষীরা৷
আলু চাষী নজমুল ইসলাম বলেন,শুরুতে আমার আলু গাছ গুলো বেশ ভালো ছিল৷ পিক ব্যবহার করার পরের দিন থেকে গাছ গুলো মরে যাওয়া শুরু করে৷ নিচের শেকড়ে পচন হয়ে সব শেষ হয়ে গিয়েছে৷ আমরা এর ক্ষতিপূরণ চাই। সেটা না হলে কিভাবে ঋণ পরিশোধ করব৷
আরেক চাষী বাচ্চু বলেন, আমাদের প্রতি বিঘা জমিতে যা খরচ হয়েছে সেটি আমাদের দেওয়া হোক। তাদের কীটনাশক ব্যবহার করে আমাদের সব শেষ হয়ে গেল৷
কীটনাশক বিক্রেতা আলম হোসেন বলেন,এই কোম্পানির কীটনাশক অনেক দিন থেকে বিক্রি করে আসছি৷ এর কাজও অনেক ভালো। এবারে যারা পিক কীটনাশক দিয়েছেন সবার আলু খেত নষ্ট হয়ে গেছে৷ আমি তাদের অবগত করেছি তারা দেখবে বলে আশ্বস্ত করেছেন৷
এসএএম এগ্রো ক্যামিকেল এর এরিয়া ম্যানেজার নুরুজ্জামান বলেন, তারা বলছেন পিক ব্যবহার করার কারনে এমন হয়েছে৷ আমি সরেজমিনে গিয়ে দেখে আমারও এটি মনে হয়েছে। সকলে পিক ব্যবহার করার কারনে নষ্ট হয়েছে। আমরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা ব্যবস্থা নেবেন বলেন জানিয়েছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, এমন খবর শোনার পর আমরা সেই ক্ষেতগুলোতে গিয়েছিলাম। সে ক্ষেতগুলোতে আর আলু হওয়ার সম্ভবন নেই। ইতিমধ্যে আমরা কীটনাশক টি পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছি৷ এটি যাতে আর বিক্রি না হয় এবং কৃষকদের ক্ষতিপূরণে আমরা সমন্বয় করছি৷