ঝালকাঠি সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুল হক আকন্দের বিরুদ্ধে লুটপাট ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ার অভিযোগ উঠেছে। একসময় দক্ষিণাঞ্চলের সর্বহারা পার্টির নেতা মজিবুল ১৯৯৭ সালে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর বিনা ভোটেই ২০২৪ সাল পর্যন্ত এই পদে রয়েছেন। তিনি ঝালকাঠি শহরের পালবাড়ী এলাকার জমি বিক্রি করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
মজিবুল হক, যিনি সমবায় অধিদপ্তরে চাকরি করতেন, রাজনৈতিক জীবন শুরু করে আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং দ্রুত ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন ঠিকাদারি কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি অবৈধভাবে সুগন্ধা ও বিষখালী নদী থেকে বালু উত্তোলন করে কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। ২০১৫ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে ঝালকাঠি বিসিক শিল্পনগরীর জন্য বালু ভরাটের টেন্ডার জিতে সরকারকে কোটি টাকা ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন।
এছাড়াও, নবগ্রাম মডেল স্কুলের সভাপতি হিসেবে ২০ বছর ধরে থাকার সুযোগে শিক্ষক নিয়োগে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এলাকাবাসী অভিযোগ করছেন, মজিবুল হক বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ ও ভুয়া তথ্য উপস্থাপন করে স্থানীয় প্রশাসনের নজর এড়িয়ে যাচ্ছেন।
২০১৭ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত শুরু করলে মজিবুল হকসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়, কিন্তু তিনি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মামলা থেকে রেহাই পান। বর্তমানে তিনি এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছেন।
মজিবুল হকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের মধ্যে রয়েছে হিন্দু পরিবারগুলোর সম্পত্তি জবরদখল, নারী কেলেঙ্কারির সম্পর্ক, এবং অবৈধ অর্থ আদায়। এখন এলাকাবাসী দাবি করছেন, দুদকের তদন্ত পুনরায় শুরু করে আসামিদের আইনের আওতায় আনা হোক।
মজিবুল হকের জীবনযাত্রা সম্পদের পরিমাণের তুলনায় আকাশচুম্বী। তিনি বর্তমানে ৬০ লাখ টাকার গাড়ি ব্যবহার করেন এবং ঢাকায় ফ্ল্যাট, বরিশালে দুইটি বাড়ি এবং নামে বেনামে ৫০ বিঘা জমি রেখেছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মজিবুল হক পুনরায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন, যা এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকার জনগণ।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।