পূজা ও ঈদের ছুটি কিংবা অন্য কোনো সময় ছুটিতে সিলেটকে বেছে নেন পর্যটকরা। ইট পাথরের যান্ত্রিক জীবন ছেড়ে ছুটে আসেন প্রকৃতির নির্মল পরশে।
এর ব্যত্যয় ঘটেনি এবারের পূজার ছুটিতেও। এই ক’দিনের ছুটিতে সিলেট পেয়েছে বিপুল সংখ্যক পর্যটক। অনেকে এক মাস/পনের দিন আগে থেকে বুকিং দিয়ে রেখেছেন হোটেল-মোটেল। তাই বলা চলে সিলেট এখন পর্যটকদের দখলে।
টানা কয়েকদিনের ছুটিতে সপরিবারে, বন্ধুবান্ধব নিয়ে সিলেটে অবস্থান করছেন লাখো পর্যটক। দিনের বেলায় পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ভিড় করছেন তারা।
সবুজ গালিচা মোড়ানো চা বাগান, পাহাড়ের বুক চিড়ে মিতালি করে নেমে আসা ঝর্ণা, স্বচ্ছ জলরাশি, জলের গহিনে থাকা নুড়ি পাথর আর আর সবুজ অরণ্য পর্যটকদের মন কাড়ে।
সরেজমিন দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) জাফলং, ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর, বিছনাকান্দি, পান্থুমাই, রাতারগুল জলারবন (সোয়াম্প ফরেস্ট) পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ভিড় করছেন পর্যটকরা। দিনভর রাতারগুল জলাবনের শত শত পর্যটক নৌকাযোগে গহীন অরণ্যে ঘুরে বেড়িয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল লাউয়াছড়ার অনিন্দ সুন্দর সবুজ অরণ্য আর বাইক্কা বিলের পাখি এবং মাধবকুণ্ডের ঝর্ণা দেখতে, সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর, প্রাচ্যের নিউজিল্যান্ড খ্যাত তাহিরপুরের নীলাদ্রি ঘুরে বেড়িয়েছেন বিপুল সংখ্যক পর্যটক। এছাড়া অলিকূল শিরোমনি হযরত শাহজালাল (র.) ও শাহপরান (র.) মাজার জিয়ারত করতেও ভিড় করছেন সিলেটে ঘুরতে আসা পর্যটকরা।
সিলেটের রাতারগুল জলারবন সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা জালাল উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দিনভর পর্যপটকমুখর ছিল রাতারগুল। অন্তত শতাধিক নৌকায় মানুষজন ঘুরতে যান গহীন বনে। নৌকায় গড়ে তিনজন করে গেছেন। অনেকে নৌকার জন্য অপেক্ষা করতেও দেখা গেছে।
ঢাকা থেকে রাতারগুলে ঘুরতে আসা শাহজাহান আহমেদ বলেন, তিনি সপরিবারে তিন দিনের জন্য সিলেট ঘুরতে এসেছেন। এতদিন ছবি ও ভিডিওচিত্রে দেখা রাতারগুলে সরেজমিন ঘুরে দেখেছি। সত্যিই এখানকার পরিবেশ অনেক সুন্দর। খুব ভাল লাগছে।
সিলেটের পূর্ব জিন্দাবাজার হোটেল গ্র্যান্ড ভিউ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইফরাত হোসেন বলেন, পূজার ছুটিতে হোটেলের কোনো কক্ষ খালি নেই। আগামী তিন-চার দিন পুরো হোটেল বুকিং হয়ে গেছে। পূজার ছুটির সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটির কারণে পর্যটক বেড়েছে।
সিলেটে পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়ে সিলেট ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার (এসপি) আবুল বাশার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, পূজার ছুটিতে সিলেটে বিপুল সংখ্যক পর্যটক অবস্থান করছেন। তারা যাতে নিরাপত্তার অভাববোধ না করেন, সেজন্য পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে সিলেট ট্যুরিস্ট পুলিশের যে পাঁচটি জোন রয়েছে, সেগুলোতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় আগে থেকেই কর্ম পরিকল্পনা করা হয়েছে। আগামী কয়েকদিনে সিলেটে পর্যটকদের নিরাপত্তার কোনো কমতি থাকবে না।
তিনি বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের ৫টি জোনের মধ্যে রয়েছে-সিলেট জোনে শাহজালাল (র.) ও শাহপরাণ মাজার, লালাখাল ও ড্রীমল্যান্ড পার্ক। জাফলং জোনে প্রকৃতি কন্যা জাফলং ও পান্থুমাই। বিছানাকান্দি জোন। মৌলভীবাজারে শ্রীমঙ্গলের লাউয়াছড়া, বাইক্কা বিল, বড়লেখার মাধবকুণ্ড। এছাড়া আরেকটি জোন সুনামগঞ্জ কেন্দ্রিক টাঙ্গুয়ার হাওর ও নীলাদ্রি লেক। যদিও ওখানে এখনও জনবল দেওয়া হয়নি। সুনামগঞ্জের ওই স্থানগুলো ও ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর জেলা পুলিশ নিরাপত্তা দিচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।