নতুন শিক্ষাক্রমে জুলাই আন্দোলনের প্রতিফলন, পরিবর্তনের ছাপ !

নিজস্ব প্রতিবেদক
জিয়াউল হক জুয়েল (স্টাফ রিপোর্টার)
প্রকাশিত: শুক্রবার ৩রা জানুয়ারী ২০২৫ ০৬:১৪ অপরাহ্ন
নতুন শিক্ষাক্রমে জুলাই আন্দোলনের প্রতিফলন, পরিবর্তনের ছাপ !

আওয়ামী লীগ সরকারের প্রবর্তিত সৃজনশীল শিক্ষাক্রম বাদ দিয়ে ২০১২ সালের কারিকুলামে ফিরে গেছে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। চলতি বছরের শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া নতুন পাঠ্যবইয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে। এসব বইয়ে জুলাই আন্দোলন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান এবং স্বৈরাচারবিরোধী লড়াইয়ের নানা গল্প ও চিত্র স্থান পেয়েছে।  


জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রণীত নতুন বইয়ে শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে অতিরিক্ত বন্দনা বাদ দেওয়া হয়েছে। পরিবর্তিত পাঠ্যপুস্তকে শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের বিবরণ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে স্বাধীনতার ঘোষণায় মেজর জিয়াউর রহমানের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।  


ষষ্ঠ শ্রেণির চারুপাঠ বইয়ে ‘কার্টুন, ব্যঙ্গচিত্র ও পোস্টারের ভাষা’ শিরোনামের একটি অধ্যায় যুক্ত হয়েছে। এখানে ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের নানা ঘটনা কার্টুন ও গ্রাফিতির মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। হেলিকপ্টার থেকে গুলি ছোড়ার চিত্র এবং আন্দোলনে শহীদ হওয়া শিক্ষার্থী আবু সাঈদ ও মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর নামও এই অধ্যায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।  


পঞ্চম শ্রেণির বাংলা বইয়ে ‘আমরা তোমাদের ভুলব না’ শিরোনামের অধ্যায়ে শহীদ মীর নিসার আলী তিতুমীর, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারসহ দেশের বিভিন্ন শহীদের সঙ্গে ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে শহীদ হওয়া শিক্ষার্থীদের কথাও উল্লেখ রয়েছে।  


নবম-দশম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ে স্বাধীনতার ঘোষণার অংশে মেজর জিয়াউর রহমানের ভূমিকা বিশদভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এ বইয়ে গণ-আন্দোলনের সময় শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং দেশ ত্যাগের কথাও উঠে এসেছে।  


এনসিটিবি জানিয়েছে, নতুন প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করতে এবং স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে এসব পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন পাঠ্যবইয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের দানবীয় শাসন, আর্থিক দুর্নীতি, এবং মুক্তিযুদ্ধের গল্পের অতিরিক্ত ব্যবহার বাদ দেওয়া হয়েছে।  


এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান জানান, জুলাই অভ্যুত্থানের মতো বড় গণ-আন্দোলন আমাদের আশাবাদী হতে শেখায়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অংশগ্রহণের বিষয়টি তাদের অনুপ্রাণিত করবে।  


নতুন শিক্ষাক্রমে রাজনৈতিক অতিকথন বাদ দিয়ে শিক্ষার্থীদের বাস্তবচিত্র তুলে ধরতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নতুন পাঠ্যবইগুলো আগামী প্রজন্মকে ইতিহাস ও দেশের প্রতি দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।