জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন নিয়ে বিতর্কের সরকারী অবস্থান স্পষ্ট করলেন ড. খালিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: শনিবার ৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৩:২৬ অপরাহ্ন
জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন নিয়ে বিতর্কের সরকারী অবস্থান স্পষ্ট করলেন ড. খালিদ

জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন ইস্যুতে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় রাজশাহী মহানগরীর নওদাপাড়ায় অবস্থিত আল মারকাজুল ইসলামি আস সালাফি মাদরাসা পরিদর্শনকালে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, “বিতর্ক সৃষ্টি হয় এমন কিছু করবে না অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।” তার বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন নিয়ে চলমান বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের দৃঢ় অবস্থান পরিষ্কার করেন।


ড. খালিদ হোসেন তার বক্তব্যে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, মাদরাসার শিক্ষার্থীরা জঙ্গিবাদের সঙ্গে যুক্ত না সেটি বিভিন্ন গোয়েন্দা রিপোর্টে প্রমাণিত হয়েছে। বরং দেশের সংকটময় পরিস্থিতিতে তারাই সর্বদা জাতির পাশে দাঁড়িয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। “মাদরাসা শিক্ষার্থীদের এখন বড় স্বপ্ন দেখতে হবে, দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে হবে,” উল্লেখ করেন তিনি। এ বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি মাদরাসা শিক্ষার্থীদের জাতীয় উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত হতে উৎসাহিত করেন।


ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, "মসজিদ, মন্দির এবং মাজারে হামলা গর্হিত কাজ। ধর্মীয় উপাসনায় যারা হামলা চালান তারা মানবতার শত্রু।" তিনি উল্লেখ করেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এমন কোনো পদক্ষেপ নেবে না যা বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে। স্থানীয় জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে মাদরাসার ছাত্রদের পূজার সময় মন্দির পাহারা দেওয়ার বিষয়েও তিনি পরামর্শ দেন। এটি ধর্মীয় সহাবস্থানের একটি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন, যেখানে মুসলিম ছাত্ররা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সুরক্ষায় ভূমিকা রাখবে।


তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, "বাংলাদেশের মাদরাসার শিক্ষক এবং ছাত্ররা কখনোই জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না। এটি আগের সরকারের ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার ছিল।" রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য দেশে বিভিন্ন সময়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলার ঘটনা ঘটে। তবে, বর্তমান সরকার এই ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে এবং হামলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।


ড. খালিদ হোসেনের এই বক্তব্যের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্মীয় সহাবস্থানের প্রতি অঙ্গীকার এবং বিতর্কমুক্ত নীতিমালা অনুসরণ করার প্রতিশ্রুতি আবারও পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। 


মাদরাসা পরিদর্শনের সময়, তিনি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন এবং তাদেরকে জাতীয় উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানান। তার এই বক্তব্য রাজশাহীসহ সারাদেশের মাদরাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা যায়। 


পরিশেষে, তিনি উল্লেখ করেন যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না যা দেশের সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং ধর্মীয় সহাবস্থানে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। তার এই বক্তব্য জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন এবং মাদরাসা শিক্ষার্থীদের ভূমিকা নিয়ে চলমান বিতর্কের মাঝে একটি নতুন দিক উন্মোচন করেছে।