দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর হিসেবে পরিচিত দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রথম ৮ মাস শেষে বন্দরটির রাজস্ব ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪৪ কোটি ১৫ লাখ টাকায়। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কয়েক বছর ধরেই রাজস্ব ঘাটতির ধারা বজায় রয়েছে এবং এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) হিলি শুল্ক স্টেশনের জন্য চলতি অর্থবছরে ৭৪০ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। প্রথম ৮ মাসে আদায় হয়েছে ৪৩৮ কোটি টাকা, যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৮২ কোটি ১৫ লাখ টাকা। ফলে ঘাটতি দেখা দিয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।
কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছে, কম শুল্কযুক্ত ও শুল্কমুক্ত পণ্যের আমদানি বেড়ে যাওয়ায় রাজস্ব আদায়ে বাধা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে চাল, ডাল, খৈল, ভুসি, পেঁয়াজের মতো পণ্য শুল্ক ছাড়ে আসায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সমস্যা হচ্ছে।
এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, কেবল পণ্যের শুল্ক নয়, অব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামোগত দুর্বলতার কারণে আমদানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। দীর্ঘদিন ধরে হিলি বন্দরের ফোরলেন রাস্তার কাজ বন্ধ রয়েছে। রাস্তার বেহাল দশার কারণে ট্রাকচালকরা একবার এলে দ্বিতীয়বার আসতে অনাগ্রহী।
আমদানিকারক মো. নাজমুল হক জানান, সরকার ফল আমদানির ক্ষেত্রে ট্রাকের চাকা অনুযায়ী শুল্কায়নের নিয়ম চালু করায় অনেক আমদানিকারক এ পথ ব্যবহার করছেন না। তাছাড়া বেনাপোলে যেসব পণ্যে কম শুল্ক, হিলিতে সেগুলোর উপর বেশি শুল্ক ধার্য হওয়ায় ব্যবসায়ীরা বিকল্প বন্দরের দিকে ঝুঁকছেন।
বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসেন বলেন, কাস্টমসের এইচএস কোড জটিলতাও বড় সমস্যা। এতে অধিক শুল্কযুক্ত পণ্য হিলি দিয়ে আমদানিতে অনীহা দেখা দিয়েছে। এতে রাজস্ব ঘাটতি বাড়ছে।
তবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আশাবাদী, বছরের বাকি সময়ে মসলা জাতীয় পণ্যের আমদানি বাড়লে ঘাটতি পূরণ সম্ভব। ফেব্রুয়ারি মাসেই লক্ষ্যমাত্রার বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে বেশি শুল্কযুক্ত পণ্য আমদানির কারণে।
সব জটিলতা কাটিয়ে অবকাঠামো উন্নয়ন ও শুল্ক ব্যবস্থায় সমতা ফিরলে হিলি স্থলবন্দরে রাজস্ব আয় আগের অবস্থায় ফিরে আসবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।