বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে আজ এক গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে, যার মধ্যে চীনা ঋণের সুদের হার হ্রাসের বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বাংলাদেশ সরকারের উত্থাপিত এই বিষয়টির প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শন করেছেন এবং আশ্বাস দিয়েছেন যে, চীনা ঋণের সুদের হার কমানো হবে।
শুক্রবার (২৮ মার্চ) প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের সফররত দলের প্রেস সচিব শফিকুল আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই সংবাদটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বৈঠকে চীনা প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের আর্থিক উন্নয়নের জন্য আরো চীনা বিনিয়োগের বিষয়েও গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া, চীনা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বাংলাদেশে স্থানান্তরিত হওয়ার বিষয়টিও আলোচিত হয়েছে।
চীন বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন ও জলসম্পদ ব্যবস্থাপনা ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। এই বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে জলসম্পদ ব্যবস্থাপনায় চীনের প্রযুক্তির ব্যবহার এবং অবকাঠামো নির্মাণে নতুন দিক উন্মোচিত হতে পারে।
অধ্যাপক ইউনূসের জন্য এটি ছিল তার প্রথম দ্বিপক্ষীয় বিদেশ সফর, এবং উভয় পক্ষই এ সফরকে অত্যন্ত সফল বলে মন্তব্য করেছে। বৈঠকের সময়, প্রেসিডেন্ট শি তার পূর্বের বাংলাদেশ সফরের স্মৃতিও স্মরণ করেছেন। তিনি জানান, ফুজিয়ান প্রদেশের গভর্নর থাকাকালীন সময়ে তিনি বাংলাদেশে ক্ষুদ্রঋণের প্রচলন নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন।
এছাড়া, প্রেসিডেন্ট শি বলেন, বাংলাদেশী আম এবং কাঁঠালের স্বাদ তার বেশ পছন্দ হয়েছে, এবং এই দুটি ফল চীনে ব্যাপকভাবে রফতানির সম্ভাবনা রয়েছে। চীনের বাজারে এই ফলগুলোর রফতানি বৃদ্ধি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি বড় সুযোগ হতে পারে।
বৈঠকে চীনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি, দুই দেশের সম্পর্ক আরো দৃঢ় ও শক্তিশালী করার জন্য উভয় পক্ষই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এ বৈঠক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও গভীর করবে এবং নতুন অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সুযোগ সৃষ্টি করবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের সহযোগিতা ভবিষ্যতে আরো ব্যাপক আকারে প্রসারিত হতে পারে, বিশেষ করে অবকাঠামো এবং জলসম্পদ ব্যবস্থাপনায়।