প্রকাশ: ২ জুলাই ২০২৫, ২১:৪২
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল এবং নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণ বিষয়ে দেশের সকল রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি জানান, কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের অষ্টম দিনের আলোচনায় এই ঐকমত্যের পথ সুগম হয়েছে এবং জুলাইয়ের মধ্যেই একটি ঐতিহাসিক "জুলাই সনদ" প্রণয়নের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে আলোচ্যসূচিতে ছিল তিনটি বিষয়—নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের নীতিমালা। এর মধ্যে প্রথম দুটি বিষয়েই দৃঢ় অগ্রগতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
আলী রীয়াজ বলেন, নির্বাচনী সীমানা পুনর্নির্ধারণে রাজনৈতিক দলগুলোর অভিন্ন অবস্থান তৈরি হয়েছে। আদমশুমারির ভিত্তিতে প্রতি দশ বছর অন্তর সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ করতে সংবিধানের ১১৯ অনুচ্ছেদে আইনি বিধান সংযোজনের প্রস্তাব এসেছে। পাশাপাশি, সংশোধিত সীমানা নির্ধারণ আইনের আলোকে দক্ষ ও নিরপেক্ষ কমিটি গঠনের বিষয়েও ঐক্যমত্য গড়ে উঠেছে।
তিনি আরও বলেন, সীমানা নির্ধারণ কমিটি যেন কেবলমাত্র সরকারি সিদ্ধান্তে নয়, রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মিলিত মতামতের প্রতিফলন ঘটে—এই প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতেই বিশেষ কমিটি পুনর্গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। এ বিষয়ে সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করা হবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে তিনি বলেন, সব রাজনৈতিক দলই এ ব্যবস্থাকে পুনর্বহাল করার পক্ষে। তবে এর মেয়াদ ও কাঠামো নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মতামত থাকলেও দুটি সুপারিশ বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছে—একটি ৯০ দিনের এবং অন্যটি ১২০ দিনের।
আলোচনায় উঠে এসেছে, প্রধান উপদেষ্টার নিয়োগ পদ্ধতি নিয়েও রাজনৈতিক দলগুলো কাছাকাছি এসেছে। এ নিয়ে যে অগ্রগতি হয়েছে, তা অত্যন্ত ইতিবাচক বলেই মনে করেন অধ্যাপক রীয়াজ।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতায় চলতি জুলাই মাসেই একটি ঐকমত্যমূলক সনদ প্রণয়ন সম্ভব। এটি যদি বাস্তবায়ন হয়, তাহলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন এক যুগের সূচনা হবে।