বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আওয়ামী লীগের গণতন্ত্রবিরোধী অবস্থানের তীব্র সমালোচনা করেছেন। মঙ্গলবার রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ১৯৭২-৭৫ সময়কালে বাকশাল গঠনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ প্রথমবারের মতো গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল।
ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার বক্তব্যে বলেন, "আওয়ামী লীগের ইতিহাস গণতন্ত্র ধ্বংসের ইতিহাস। তারা বারবার জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। তাই আমরা আর কখনোই আওয়ামী লীগকে গণতন্ত্রের সুযোগ দিতে পারি না।" তিনি ২৫ মার্চের কালরাত্রি স্মরণ করে বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম হত্যাকাণ্ডের জন্য আজও ক্ষমা চায়নি পাকিস্তান।
বিএনপি নেতা শেখ হাসিনার ভারত পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, "জনগণের ক্ষোভ দেখলেই আওয়ামী লীগ নেতারা পালিয়ে যায়। এবারও তাই হয়েছে।" তিনি দাবি করেন, দেশের মৌলিক সংস্কার বিএনপির হাতেই হয়েছে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেছিলেন এবং বেগম খালেদা জিয়া ২০৩০ ভিশন দিয়েছিলেন।
বর্তমান সরকারের সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে ফখরুল বলেন, "নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু কিছু মহল নির্বাচন বিলম্বিত করতে ষড়যন্ত্র করছে।" তিনি সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার চেষ্টার তীব্র নিন্দা জানান এবং বলেন, সেনাবাহিনী সবসময় জনগণের পাশে দাঁড়ায়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মোশাররফ হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য আজও পূরণ হয়নি। তিনি জিয়াউর রহমানের অবদানকে স্মরণ করে বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনই প্রমাণ করেছে জনগণ ভোট দিয়ে সরকার পরিবর্তন করতে পারে।
ড. মোশাররফ বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে বলেন, "স্থানীয় সরকার নির্বাচনের নামে জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিলম্বিত করার চক্রান্ত চলছে। কিন্তু জনগণ সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে সক্ষম।"
আলোচনা সভায় বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে আগামী দিনে দলীয় কর্মসূচি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা করা হয়। ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার বক্তব্যে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, "ইনশাআল্লাহ, আগামীতে বিএনপিই রাষ্ট্রক্ষমতায় আসবে।"
বক্তারা স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যেই বিএনপির সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। অনুষ্ঠানে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয় এবং বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।