পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে এক ভয়াবহ জলদস্যু হামলার ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে পায়রা বন্দর থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার এক ট্রলারে হামলা চালায় জলদস্যুরা। এ হামলায় তিন জেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা সংকটাপন্ন।
এফবি মা নামের ট্রলারের মাঝি সরোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, তাঁর সাথে আরও ১২ জন জেলে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। গভীর রাতের দিকে যখন তাঁরা তীরে ফিরছিলেন, তখন একদল জলদস্যু বন্দুকের মুখে তাঁদের জিম্মি করে ট্রলারটি আক্রমণ করেন। জলদস্যুরা প্রথমে গুলি চালিয়ে তিন জেলেকে গুলিবিদ্ধ করেন, এরপর অস্ত্রের মুখে জেলেদের সবাইকে জিম্মি করে ট্রলার থেকে প্রায় ৩ লাখ টাকার ইলিশ, ১২টি মোবাইল ফোন, জ্বালানী তৈলসহ আনুষাঙ্গিক মালামাল লুট করে নিয়ে যান।
গুলিবিদ্ধ জেলেরা হলেন জালাল শরীফ (৫৫), মো: শাহআলম (৪৫) এবং মিজানুর রহমান (২৫)। তাঁদের সবাই বাড়ি মহিপুর থানার বিভিন্ন গ্রামে। জালাল শরীফের ডান চোখে গুলি লেগেছে, অন্যদের শরীরের বিভিন্ন অংশে গুলির চিহ্ন রয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে কলাপাড়া ৫০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হয়, যেখানে চিকিৎসকরা জালাল শরীফের অবস্থাকে গুরুতর বলে শনাক্ত করে তাঁকে বরিশাল পাঠান।
বাকি দুজন জেলে কলাপাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হামলার পর ট্রলারের মাঝি সরোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, যখন জলদস্যুরা মালামাল নিয়ে চলে যায়, তখন তাঁরা প্রাণভিক্ষা এবং ট্রলারটি না নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন, কিন্তু জলদস্যুরা চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যান।
এ ঘটনায় মহিপুর মৎস্য আড়ৎদার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুমন দাস জানান, এটি একটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক ঘটনা। তাঁরা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি তদন্তের দাবি জানাচ্ছেন।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় এখনও কোনও লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ঘটনার পর স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীরা ও জলদস্যুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের কাছে তাগিদ দিয়েছেন। তাঁরা আশাবাদী, দ্রুত দোষীদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।