নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং রাষ্ট্রে ফ্যাসিবাদের চক্রান্ত মোকাবিলার দাবিতে আগামী মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) থেকে রমজান মাস শুরুর আগ পর্যন্ত দেশব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি জানান, ১০ দিনের মধ্যে ৬৪টি জেলায় রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ করবে বিএনপি। এসব কর্মসূচিতে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
রিজভী বলেন, "১১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া কর্মসূচি পর্যায়ক্রমে মহানগর, বিভাগীয় শহর এবং জেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হবে। কর্মসূচির তারিখ ও সিনিয়র নেতাদের তালিকা শিগগিরই গণমাধ্যমকে জানানো হবে।"
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবের কোনো কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না। বরং প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সরকারের অনুগত ব্যক্তিদের বসিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে।
বিএনপি নেতা রিজভী দাবি করেন, বর্তমান সরকারের শাসনামলে গণহত্যার আসামিরা জামিন পাচ্ছে, কিন্তু বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা দমন-পীড়নের শিকার হচ্ছে। তিনি বলেন, "সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের ৫৭২ জন নেতা ও দোসরদের জামিন হয়েছে। অথচ হাজার হাজার বিরোধী দলের নেতাকর্মী এখনো কারাগারে রয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "ছাত্র-জনতা-নাগরিকদের গণঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে চালানো দমন-পীড়নের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের এখনো আইনের আওতায় আনা হয়নি। সহস্রাধিক মানুষ নিহত হয়েছে, হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছে, কিন্তু এই বর্বরোচিত ঘটনার বিচার হয়নি।"
রিজভী অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতারা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। তিনি বলেন, "গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত, অথচ তাকে এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি।"
তিনি আরও বলেন, "গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়েছে, কিন্তু দোষীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা সারাদেশে তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে, অথচ সরকার নীরব।"
বিএনপি নেতা বলেন, "আমরা সরকারের কাছে জানতে চাই, গণহত্যার দায়ে অভিযুক্তদের জামিন হচ্ছে কিভাবে? গণতন্ত্রের স্বার্থে এসব প্রশ্নের জবাব সরকারকে দিতে হবে।"
তারেক রহমানের বক্তব্য তুলে ধরে রিজভী বলেন, "অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সব পদক্ষেপ সফল হবে না, কিন্তু এর ব্যর্থতা গণতন্ত্রের জন্য বড় ধাক্কা হবে। তাই সরকারের উচিত জনগণের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া।"
তিনি বলেন, "বিএনপি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সফলতা দেখতে চায়। তবে সরকার নিজেই সফল হতে চায় কি না, সেটাও ভাবার বিষয়।"
বিএনপির ঘোষিত কর্মসূচির মাধ্যমে দলটি আবারও রাজপথে সক্রিয় হতে চায় বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তবে সরকারের অবস্থান কী হবে, তা সময়ই বলে দেবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।