পার্বত্য চুক্তির সাংঘর্ষিক ধারা সংশোধনের দাবি নাগরিক পরিষদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
আরিফুল ইসলাম মহিন -খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সোমবার ২রা ডিসেম্বর ২০২৪ ০৪:৫০ অপরাহ্ন
পার্বত্য চুক্তির সাংঘর্ষিক ধারা সংশোধনের দাবি নাগরিক পরিষদের

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির সাংঘর্ষিক ও বৈষম্যমূলক ধারা সংশোধন করে চুক্তির পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ। সোমবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় খাগড়াছড়ি শহরের এফএনএফ রেস্টুরেন্টে এ দাবিতে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।  


সংগঠনের জেলা সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ লোকমান হোসেন লিখিত বক্তব্যে বলেন, “১৯৯৭ সালের পার্বত্য চুক্তি শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে করা হলেও দীর্ঘ ২৭ বছরে পার্বত্য এলাকায় শান্তি পুরোপুরি ফিরে আসেনি। চুক্তির কয়েকটি ধারা সংবিধান বিরোধী এবং সেগুলো জনগণের মধ্যে বৈষম্য তৈরি করছে। এসব ধারা দ্রুত সংশোধন করা প্রয়োজন।”  


তিনি আরও উল্লেখ করেন, “চুক্তির পর পাহাড়ে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। একটি কলার ছড়া বিক্রি করতেও চাঁদা দিতে হয়। সশস্ত্র গ্রুপগুলোর দৌরাত্ম্যের কারণে পাহাড়ি-বাঙালি উভয় সম্প্রদায়ই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”  


সংবাদ সম্মেলনে পার্বত্য চুক্তির কিছু ধারা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট দায়ের এবং আদালতের পক্ষ থেকে কয়েকটি ধারা বাতিলের কথা তুলে ধরা হয়। বক্তারা বলেন, সংবিধান ও রাষ্ট্রের অখণ্ডতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো চুক্তি টেকসই হতে পারে না। তাই বর্তমান সরকারের উচিত চুক্তির সংশোধনের মাধ্যমে এর কার্যকারিতা পুনর্বিবেচনা করা।  


এ সময় পার্বত্য চুক্তির আওতায় গঠিত ভূমি কমিশনের কার্যক্রম নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। বক্তারা দাবি করেন, ভূমি কমিশনের সিদ্ধান্ত অনেক ক্ষেত্রে পাহাড়ি-বাঙালির মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করছে।  


সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুম, সাংগঠনিক সম্পাদক ডালিম এবং মহিলা পরিষদের সভানেত্রী সালমা আহমেদ মৌ।  


তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, পার্বত্য এলাকায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের উদ্যোগ নেওয়া হোক এবং প্রত্যাহারকৃত নিরাপত্তা ক্যাম্প পুনঃস্থাপন করা হোক। পাশাপাশি আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমাকে অপসারণের দাবি জানানো হয়।  


সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, “পার্বত্য চুক্তি সংবিধানের অধীনে হওয়ায় এর কোনো ধারা সাংবিধানিক সীমার বাইরে থাকতে পারে না। প্রয়োজনে সময় ও পরিস্থিতির দাবি অনুযায়ী চুক্তির সংশোধন অপরিহার্য।”  


এ দাবির মাধ্যমে পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন বক্তারা।