নির্বাচনী ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তনের লক্ষ্যে একাধিক প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। রাজনৈতিক দল থেকে মনোনয়ন না পেয়ে অন্য দলের প্রার্থী হওয়ার সুযোগ বন্ধ এবং নতুন দলে তিন বছরের সদস্যপদ থাকার বাধ্যবাধকতা প্রস্তাবনার শীর্ষে রয়েছে।
কমিশনের একাধিক সূত্র জানায়, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অন্তত ১৫-১৬টি বিষয় সংস্কারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ভোটারের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ন্যূনতম ভোট পড়ার হার নির্ধারণ, ‘না’ ভোটের বিধান ফিরিয়ে আনা এবং নির্বাচনে অটোপাস বন্ধ করা।
২০২০ সালে ঢাকা-১০ উপনির্বাচনে মাত্র ৫ শতাংশ ভোট পড়েছিল। কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, ভোট পড়ার হার ৫০ শতাংশের কম হলে তা বাতিল করা হবে। এছাড়া নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা সংযোজন এবং প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দেওয়ার বিষয়েও আলোচনা চলছে।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার জানান, প্রার্থী নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতর গণতান্ত্রিক চর্চা নিশ্চিত করাও প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে। তিনি বলেন, "আমরা কোনো বিষয় চূড়ান্ত করিনি। অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা শেষে সুপারিশ চূড়ান্ত করব। তবে না ভোট চালু, উচ্চকক্ষের প্রবর্তন এবং প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ নিশ্চিত করার মতো বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছি।"
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে কমিশনটি গঠন করে। কমিশন এ পর্যন্ত ৩০টির বেশি বৈঠক করেছে। সাবেক নির্বাচন কমিশনার, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী, নারী প্রতিনিধি ও পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়েছে।
কমিশনের সদস্যরা মনে করেন, ‘না’ ভোটের বিধান চালু হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়বে। একক প্রার্থী হিসাবে জয়ী হওয়ার সুযোগও কমবে। প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা বিবেচনায় আনা এবং দলীয়ভাবে যোগ্য প্রার্থী মনোনয়নের প্রবণতা বাড়বে।
কমিশনের সুপারিশগুলো চলতি মাসেই সরকারের কাছে জমা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এই উদ্যোগ কার্যকর হলে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।