অন্তঃসত্ত্বা হওয়াই কাল হল প্রেমিকার, লুটের অস্র দিয়ে গুলি করে তন্ময়

নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলা প্রতিনিধি,মুন্সিগঞ্জ
প্রকাশিত: বুধবার ৪ঠা ডিসেম্বর ২০২৪ ১১:৫৫ পূর্বাহ্ন
অন্তঃসত্ত্বা হওয়াই কাল হল প্রেমিকার, লুটের অস্র দিয়ে গুলি করে তন্ময়

মুন্সীগঞ্জের ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে প্রেমিকা শাহিদা ইসলাম রাফাকে পরিকল্পিতভাবে গুলি করে হত্যার অভিযোগে প্রেমিক তৌহিদ শেখ তন্ময় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত পিস্তলটি গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন রাজধানীর ওয়ারি থানা থেকে লুট করেছিলেন তৌহিদ।  


জেলা ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. ইয়াসিন জানান, টিকটকের মাধ্যমে তৌহিদ ও শাহিদার পরিচয় ঘটে। চার বছর প্রেমের সম্পর্ক চললেও বিয়েতে রাজি ছিলেন না তৌহিদ। শাহিদার আড়াই মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর জানিয়ে বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হন তিনি।  


গত ৩০ নভেম্বর ভোরে খানবাড়ি সিএনজি স্ট্যান্ডে শাহিদা ও তৌহিদ উপস্থিত হন। শাহিদার বিয়ের দাবিতে বিরোধ শুরু হলে তৌহিদ প্রথমে তাকে চড়থাপ্পড় মারেন। পরে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের সার্ভিস লেন ধরে পদ্মা সেতু উত্তর টোল প্লাজার কাছে পৌঁছে পিস্তল দিয়ে শাহিদাকে গুলি করেন। পাঁচ রাউন্ড গুলির পর শাহিদা ঘটনাস্থলেই মারা যান।  


শাহিদাকে হত্যার পর তৌহিদ পালানোর চেষ্টা করেন। কেরাণীগঞ্জের বটতলীতে পিস্তল ফেলে দিয়ে আত্মগোপনের জন্য পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় তিনি মনপুরা দ্বীপে পালানোর চেষ্টা করেন। তবে গত সোমবার ভোরে ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।  


তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানান, হত্যার আগে ইউটিউব দেখে পিস্তল চালানো শিখেছিলেন তৌহিদ। হত্যায় ব্যবহৃত পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার মধ্যে ওয়ারি থানা থেকে অস্ত্র লুটের অভিযোগও অন্তর্ভুক্ত।  


নিহত শাহিদা রাজধানীর ওয়ারিতে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। তিনি নারিন্দা এলাকায় ডে-কেয়ার সেন্টারে কাজ করতেন। এর আগে তার একটি বিয়ে হয়েছিল, যা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।  


শ্রীনগর থানায় শাহিদার মা জরিনা খাতুনের দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলছে। পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শামসুল আলম সরকার জানান, হত্যাকাণ্ডটি পুরো দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং তদন্ত দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করা হবে।