লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার আলো কার্যত নিভু নিভু। মাসে একবার শিক্ষকরা উপস্থিতি খাতায় স্বাক্ষর করে বেতন তুললেও শিক্ষার্থীদের পাঠদান মূলত চালাচ্ছেন প্রক্সি শিক্ষকরা। বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের কিছু অংশে শিক্ষার্থীদের পড়ানোর বদলে রাখা হয়েছে গরু, ছাগল এবং ক্ষেতের ফসল।
উপজেলার তিস্তা নদীর কোল ঘেঁষে অবস্থিত এই বিদ্যালয়ে তিনজন শিক্ষক রয়েছেন। তাঁরা হলেন প্রধান শিক্ষক সেলিম উদ্দিন, সহকারী শিক্ষক মহা রানী রায় ও কামরুল ইসলাম। বিদ্যালয়ের ১০৮ জন শিক্ষার্থীর পাঠদান চালাতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে দুইজন প্রক্সি শিক্ষক—সাদেকুল ইসলাম এবং রুবেল ইসলাম। তবে রুবেল প্রায়ই অনুপস্থিত থাকেন বলে জানিয়েছেন সাদেকুল।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ে কোনো নিয়মিত শিক্ষক নেই। শিক্ষার্থীরা খেলার মাঠে ব্যস্ত। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শিক্ষকরা মাসে এক বা দুইবার আসেন, আর তখনও তেমন কোনো পাঠদান হয় না।
স্থানীয় বাসিন্দা তোয়া মিয়া বলেন, “শিক্ষকরা স্কুলে আসেন না। তাই স্থানীয় লোকজন শ্রেণিকক্ষগুলোতে গরু-ছাগল আর ক্ষেতের ফসল রাখছেন। এখানকার শিশুরা ঠিকমতো নিজের নামও লিখতে পারে না।”
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিম উদ্দিন এ বিষয়ে বলেন, “চরের স্কুল হওয়ায় আমাদের আসতে দেরি হয়। এজন্য দুইজনকে সহায়তা করার জন্য রাখা হয়েছে। তবে এটি প্রক্সি শিক্ষক নয়।”
হাতীবান্ধা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফেরদৌসি বেগম বলেন, “বিদ্যালয়ে প্রক্সি শিক্ষক দিয়ে পাঠদান করানোর কোনো নিয়ম নেই। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আরিফুল ইসলাম বলেন, “চরের বিদ্যালয়গুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া।”
চরের কোমলমতি শিশুরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের উচিত এই বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়ে সমাধান করা।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।