“সিসা দূষণ প্রতিরোধে, আমরা আছি একসাথে”—এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে কুয়াকাটায় পালিত হয়েছে সচেতনতামূলক র্যালি ও মানববন্ধন কর্মসূচি। ২০ থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সিসা দূষণ প্রতিরোধ সপ্তাহ ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন স্থানীয় শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
শনিবার দুপুরে ইয়ুথ নেট গ্লোবাল ও পিওর আর্থ বাংলাদেশের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত র্যালিটি কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সামনে থেকে শুরু হয়ে মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে সমুদ্র সৈকতে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সিসার ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে আলোচনা করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সিসা একটি বিষাক্ত ভারী ধাতু, যা বিশেষ করে শিশু ও গর্ভবতী নারীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। সিসা শিশুর মস্তিষ্ককে ধ্বংস করে, ফলে তাদের বুদ্ধিমত্তা কমে যায় এবং শারীরিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়। বাংলাদেশে প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ শিশু সিসা বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত, যা উদ্বেগজনক।
আয়োজকরা জানায়, সিসা বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যে, যেমন অ্যালুমিনিয়াম ও সিরামিকের বাসনপত্র, দেয়াল রং এবং শিশুদের খেলনা ইত্যাদিতে মিশ্রিত থাকতে পারে। এছাড়া, অনিরাপদ সিসা-অ্যাসিড ব্যাটারি ভাঙা ও রিসাইক্লিং কারখানাগুলো থেকে সিসা দূষণ ছড়ায়।
মানববন্ধনে ইয়ুথ নেট গ্লোবালের জেলা সমন্বয়ক মো. জাহিদুল ইসলাম সিসা প্রতিরোধে পাঁচটি দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো:
১. ভোগ্যপণ্যে সিসার মিশ্রণ বন্ধ করা।
২. পণ্যের নিরাপদ মানদণ্ড ও কঠোর মনিটরিং নিশ্চিত করা।
৩. অনিরাপদ সিসা অ্যাসিড ব্যাটারি কারখানা বন্ধ বা নিরাপদ রিসাইক্লিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
৪. সিসা দূষিত এলাকাগুলো চিহ্নিত করে মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করা।
৫. সিসা দূষণ প্রতিরোধে বিদ্যমান আইন পর্যালোচনা ও নতুন আইন প্রণয়ন এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি।
এতে উপস্থিত বক্তারা জানান, সিসামুক্ত নিরাপদ পরিবেশ গড়তে এবং শিশুদের স্বাস্থ্য রক্ষায় সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। আয়োজকরা আশা প্রকাশ করেন যে, এই কর্মসূচির মাধ্যমে সমাজে সিসা দূষণের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে উঠবে।
র্যালি ও মানববন্ধন কর্মসূচিতে কুয়াকাটা বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী, স্থানীয় জনগণ এবং বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন, যা সিসা দূষণ প্রতিরোধের প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।