আরাকান আর্মির কাছ থেকে ১৬ বাংলাদেশী জেলেকে ফিরিয়ে আনলো বিজিবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
আমান উল্লাহ কবির, উপজেলা প্রতিনিধি টেকনাফ (কক্সবাজার)
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১৫ই অক্টোবর ২০২৪ ০৬:০১ অপরাহ্ন
আরাকান আর্মির কাছ থেকে ১৬ বাংলাদেশী জেলেকে ফিরিয়ে আনলো বিজিবি

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি: বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে মিয়ানমারের আরাকান আর্মির হাতে বন্দী ১৬ বাংলাদেশী জেলেকে উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো মহিউদ্দিন আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।


তিনি জানান, ১৪ অক্টোবর রাতে মিয়ানমারের আরাকান আর্মি নাফ নদীর শূন্য রেখায় এসে জেলেদের টেকনাফ বিজিবির নিকট হস্তান্তর করে। এই ঘটনা বাংলাদেশের জন্য একটি সাফল্য বলে বিবেচিত হচ্ছে, যেখানে বিজিবি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে জেলেদের ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে।


জানা গেছে, গত ২৮ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের নুনিয়ারছড়া ফিশারি ঘাট থেকে ১৬ জন জেলে একটি ট্রলারে গভীর বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যান। ৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় সন্ত্রাসী ও ডাকাতদল তাদের ট্রলারকে আক্রমণ করে এবং জেলেদের বন্দী করে। এরপর, ৭ অক্টোবর সকালে তারা জেলেদের বঙ্গোপসাগরের মিয়ানমার অংশে একটি চরে ছেড়ে দেয়। 


এ ঘটনার পর, জেলেরা মিয়ানমারের বেসামরিক জনগণের সহায়তায় আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ করে আত্মসমর্পণ করেন। আটকের প্রায় ছয় দিন পর, ১৩ অক্টোবর তাদের অবস্থা সম্পর্কে টেকনাফ বিজিবিকে অবহিত করা হয়। 


বিজিবি টেকনাফ ব্যাটালিয়ন মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে ১৪ অক্টোবর রাতে নাফ নদীর শূন্য রেখায় আসা আরাকান আর্মি ১৬ জন জেলেকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে। 


জেলেদের মধ্যে রয়েছেন কক্সবাজারের রামু উপজেলার তুরিঙ্গাকাটা গ্রামের মৃত হোসেন আহমেদের ছেলে মোহাম্মদ ইসমাইল (২৭), কক্সবাজার সদরের মৃত কেফায়েত উল্লাহর ছেলে আব্দুল হাফেজ (২৮), এবং অন্যান্য ১৪ জন জেলে।


বিজিবি জানিয়েছে, ফিরিয়ে আনা জেলেদের আত্মীয়-স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে, বিজিবি একাধিকবার মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছে যাতে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জেলেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। 


উল্লেখ্য, সম্প্রতি মিয়ানমারের নৌ বাহিনী বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকার করতে যাওয়া বাংলাদেশী জেলেদের উপর গুলি ছুঁড়ে। এই ঘটনার পর একজন জেলে নিহত হয় এবং ৫৮ জন জেলেকে বিজিবি ফেরত এনেছিল। 


এভাবে, বিজিবির কার্যক্রম মিয়ানমারের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একটি কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে নিরাপত্তা পরিস্থিতি উন্নত করতে সহায়ক হবে।